কীভাবে ভোট গণনা হয়?
যুক্তরাষ্ট্রে কোনো কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি নেই—প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ব্যালট গণনার নিজস্ব প্রক্রিয়া রয়েছে। স্থানীয় ও অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা রিয়েল টাইমে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করতে থাকেন এবং সংবাদ এজেন্সিগুলো সেই ফলাফল ব্যবহার করে এবং কখনো কখনো তার সঙ্গে পরিসংখ্যানগত কৌশলের সমন্বয় ঘটিয়ে কে জয়ী হতে পারেন, তার পূর্বাভাস দেয়।
এভাবে সংবাদমাধ্যমগুলো প্রায়ই ব্যালট গণনা শেষ হওয়ার আগে বা কর্মকর্তারা চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগেই কে বিজয়ী হতে চলেছেন, তা “কল” করে বা “পূর্বাভাস” দেয়। অনেক ডিসট্রিক্টে ভোট গণনা শেষ হতে কয়েক দিন বা সপ্তাহও লেগে যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আংশিক ফলাফল ব্যবহার করেই গাণিতিক প্রক্রিয়ায় বিজয়ীর পূর্বাভাস দেওয়া যায়। তবে যখন কোনো অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান খুব কম থাকে, তখন সংবাদমাধ্যমগুলো পূর্বাভাস না দিয়ে চূড়ান্ত ফলের জন্য অপেক্ষা করে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের ফলাফল প্রকাশ করা হয় না।
সরাসরি ভোটে নয়, ইলেক্টোরাল ভোটের মাধ্যমে নির্বচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
আমেরিকার ভোটাররা যখন ভোট দেন, তখন তারা সরাসরি তাদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে তা দেন না। কারিগরি দিক দিয়ে চিন্তা করলে, তারা তাদের পছন্দের ইলেক্টর বেছে নেন, যারা ইলেক্টোরাল কলেজের অংশ। এরপর এই ইলেক্টররা প্রেসিডেন্ট বেছে নেন। ইলেক্টোরাল কলেজ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে প্রতিনিধি বা ইলেক্টর বেছে নেওয়া হয়। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেক্টরের সংখ্যা ভিন্ন।
যারা আমেরিকার সংবিধানের বুনিয়াদ রচনা করেছিলেন, তাদের প্রত্যাশা ছিল প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী একটি জাতীয় নির্বাচনের বদলে বেশ কয়েক দফা আঞ্চলিক নির্বাচন জিতে আসবেন, যাতে সেই প্রেসিডেন্ট আরও ভালো করে দেশের মানুষের নানামুখী স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।
দুইটি অঙ্গরাজ্য (মেইন ও নেব্রাস্কা) ছাড়া, বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষেই অঙ্গরাজ্যের সব ইলেক্টর যোগ হয়। এ ক্ষেত্রে পপুলার ভোটে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান যত ছোট কিংবা বড় হোক না কেন, তাতে কিছু পরিবর্তিত হয় না।
ইলেক্টরের সংখ্যা ৫৩৮, যা কখনো বদলায় না। এই সংখ্যাটি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের মোট সদস্য সংখ্যার সমান—৪৩৫ জন প্রতিনিধি, ১০০ জন সেনেটর ও কলাম্বিয়া ডিসট্রিক্টের তিন ইলেক্টর। প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হতে হলে একজন প্রার্থীকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইলেক্টোরাল ভোট জিততে হয়, যা হলো অন্তত ২৭০।
যদি কোনো প্রার্থী ন্যুনতম ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট না জেতেন, তাহলে হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে থাকে।
- ১১ ডিসেম্বর নাগাদ প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ইলেক্টোরদের স্লেটকে সার্টিফাই বা বৈধতা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
- ১৭ ডিসেম্বর ৫৩৮ ইলেক্টর তাদের নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যের রাজধানীতে জমায়েত হয়ে তাদের ভোট দেবেন এবং সনদে সাক্ষর করবেন।
- ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই ইলেক্টোরাল সনদগুলোকে ওয়াশিংটনে স্থানান্তর করতে হবে।
- ৬ জানুয়ারি, কংগ্রেস একটি যৌথ অধিবেশনের মাধ্যমে ইলেক্টোরাল ভোটকে সার্টিফাই করে।
ট্রাম্প ভোট দিলেন ফ্লোরিডায়
মঙ্গলবার ফ্লোরিডার মর্টন ও বারবারা রিক্রিয়েশন সেন্টার ভোটকেন্দ্রে ভোট দিলেন রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য ভোট দিচ্ছেন। আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় (গ্রেনিচ মান সময় ১১:০০) ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। ভোট গ্রহণ চলবে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা সময় ধরে।
হ্যারিস ভোট দিয়েছেন ডাকযোগে
ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটার কমালা হ্যারিস ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।
বেশির ভাগ রাজ্যে ডাকযোগে ভোট এবং আগাম ভোট দেয়ার ব্যবস্থা থাকায় আট কোটির বেশি মানুষ ইতোমধ্যেই ভোট দিয়ে ফেলেছেন।