ভারত-নিয়ন্ত্রিত বিতর্কিত ভূখণ্ড জম্মু ও কাশ্মীরে গত দশ বছরে এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বুধবার ৫৬ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার দ্বিতীয় দফার ভোটে ২৬টি বিধানসভা আসনে ২৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তিন দফায় এই ভোট পর্ব শেষ হবে। ২৫ লক্ষের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ভোটদানে যোগ্য।
ঝঞ্ঝাটবিহীন ভোটপর্ব পরিচালনা নিশ্চিত করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনী কর্মকর্তা পাণ্ডুরঙ্গ কোন্দবারাও পোলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ছয়টি জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হয়েছে। তবে, বচসা ইত্যাদির মতো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে কোনও কোনও জায়গায়, কিন্তু কোথাও পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন নেই।”
২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের সীমিত স্বায়ত্তশাসন বাতিল করার পর এই ভূখণ্ড প্রথম নির্বাচন প্রত্যক্ষ করছে।
স্থানীয় কিছু মানুষ এই নির্বাচনকে বিজেপি ও কাশ্মীরের জনগণের লড়াই হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, গত দশকে সরকার ধাপে ধাপে তাদের একাধিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
কামারওয়ারির বাসিন্দা ইখলাক শাহ ভিওএ-কে বলেন, “আমি যখন থেকে ভোটার হয়েছি তখন থেকে আমি নির্বাচন বয়কট করেছি। আজ আমার মনে হচ্ছে, ভোট দিয়ে নয়াদিল্লিকে একটা বার্তা দেওয়া জরুরি। আমরা যদি এখন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমার বিশ্বাস, বিজেপি সরকার আমাদের উপর তাদের বিপজ্জনক কর্মসূচি চাপিয়ে দেবে।”
তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের খেয়াল রাখার চেয়ে এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করার দিকে ভারতের বেশি আগ্রহ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুজামিল মকবুল ভিওএ-কে বলেন, দলগুলি টুকরো টুকরো হয়ে রয়েছে কারণ এদের নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
আওয়ামি ন্যাশনাল কনফারেন্স বা এএনসির সহ-সভাপতি মুজাফফর শাহ বলেছেন, সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলি যদি অধুনালুপ্ত পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশনের (পিএজিডি) ব্যানারে সম্মিলিতভাবে কাজ করতো তাহলে স্থানীয় জনগণের আন্দোলন আরও জোরালো হতো।
পিএজিডি ছিল প্রধান দলগুলির একটি জোট। ভারত যাতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দেয় তার জন্য চাপ দিতে এটি তৈরি করা হয়েছিল।
এরই মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, সিঙ্গাপুর ও নরওয়ের মতো দেশ থেকে ১৬ জন বিদেশী কূটনীতিকের একটি প্রতিনিধিদল ভারত সরকারের আমন্ত্রণে কাশ্মীরে সফর করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের তৃতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১ অক্টোবর।