গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে মুদি দোকান মালিক আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ব্যবসায়ী ও মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার বাসিন্দা আমির হামজা স্বেচ্ছায় মামলাটি দায়ের করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী মামুন মিয়া।
মামলার অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন; পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলায় আমির বলেন, গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে আবু সাঈদ নিহত হন। আইজিপি ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ জনতার ওপর গুলি চালায়।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় বসবাস করেন। অভিযোগে আমির আরো বলেন, এই মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে পারছে না নিহত ব্যক্তির পরিবার।
জুলাই মাসের এক তারিখে সরকারী চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবীতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন দু’সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপক গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থদের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে প্রায় ৩০০জন নিহত হয়ে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে এক গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সেদিন বিকালে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তাঁরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৯ আগস্ট বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে।
পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সারা দেশ জুড়ে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বাসভবনে হামলা এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সহ শত শত ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হাসিনার পতনের পরের দু’দিনে দেশে অন্তত ২৩২ নিহত হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।