অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শেখ হাসিনা: ‘বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির জন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেবে সরকার’


কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকায় সংঘর্ষ। ১৮ জুলাই, ২০২৪।
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকায় সংঘর্ষ। ১৮ জুলাই, ২০২৪।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির জন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুষ্ঠু ও মানসম্মত তদন্তের লক্ষ্যে, সরকার বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেবে বলে জানান তিনি। বলেন, “আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিকে যথাযথ ও মানসম্মত করতে বৈদেশিক কারিগরি সহায়তা গ্রহণ করবো।”

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় এ কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সব মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন' গঠন

এদিকে, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত সাংবিধানিক, আইনি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি 'জাতীয় গণতদন্ত কমিশন' গঠন করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান কমিশনের যুগ্ম সদস্য সচিব তানজীমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত করা হয়।”

“এই সহিংসতার প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ পথে নেমে এলে, রংপুরে আবু সাঈদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়। কিন্তু পুলিশ যখন মামলা করে, তখন সাধারণ ছাত্র ও জনগণকে দায়ী করা হয়। এতে গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে এবং এসব ঘটনায় সত্য উদ্‌ঘাটনের দাবি উঠেছে;” আরো বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে 'জাতীয় গণতদন্ত কমিশন' গঠন করা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে 'জাতীয় গণতদন্ত কমিশন' গঠন করা হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় সংবাদপত্রের হিসাব মতে অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হলেও, সরকারি হিসাবে তা ১৪৭ জন। এছাড়া, নির্যাতন, গুলিবর্ষণ, গণগ্রেপ্তারসহ বিভিন্নভাবে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান, প্রচলিত আইন ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

এসব ঘটনার কারণ উদঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের লক্ষ্যে, দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে; বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’-এর নেতৃত্বে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন। কমিশনের সদস্যরা হলেন; মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান, সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী অনীক আর হক, অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা।

কমিশনের যুগ্ম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও সুলতানা কামাল। আর, সদস্য সচিব হিসেবে যৌথভাবে কাজ করবেন অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।

এ ছাড়া, এই গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন; জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন, সারা হোসেন, বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ্ খান, শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, আইনের অধ্যাপক সাইমুম রেজা তালুকদার, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রাশনা ইমাম ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১ জুলাই থেকে সংগঠিত বিভিন্ন সহিংসতা, নির্যাতন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও লেখাসহ সব ধরনের তথ্য কমিশনের কাছে পাঠাতে আহবান জানিয়েছে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন।

XS
SM
MD
LG