কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সংঘাত-সহিংসতার পর চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বৈঠক করেছেন সাত মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। যোগ দেন; আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এছাড়া, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সিনিয়র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, বুধবার(৩১ জুলাই) থেকে শনিবার (৩ আগস্ট) পর্যন্ত ঢাকাসহ চার জেলায় সকাল ৭টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে খোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
আর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কবে ও কখন আবার চালু হবে, তা আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টার পর জানানো হবে বলে জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
৪ জেলায় রাত ৮টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে কারফিউ
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, বুধবার(৩১ জুলাই) থেকে শনিবার (৩ আগস্ট) পর্যন্ত ঢাকাসহ চার জেলায় সকাল ৭টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।
কারফিউ শিথিল করা জেলা ও মহানগরগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা মহানগর ও জেলা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী জেলা। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আজকে মিটিং এ দীর্ঘ আলোচনা করি। বাংলাদেশে পরিস্থিতি ধীরে ধীর স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাই বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানাবেন এবং ইন্টারনেট বিষয়ে টেলিকম প্রতিমন্ত্রী অবহিত করবেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ধাপে ধাপে খোলা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে খোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী নওফেল বলেন, “আমরা জননিরাপত্তা এবং ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে চাই। এর আগেও বলেছি; যারা নিরাপরাধ শিক্ষার্থী এবং যারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন অংশগ্রহণ করেছে তারা কেউই যাতে কোনো ধরনের প্রশাসনিক হয়রানির শিকার না হন বা আইনি জটিলতায় না পড়েন, এই ঘোষণা দিয়েছি।”
“কোনো শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক যদি মনে করেন তিনি নিরপরাধ, অবশ্যই সেটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা সরাসরি তাদের সকল ধরনের সহযোগিতা দেবো। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে অবশ্যই সেগুলো বলা প্রয়োজন;” তিনি যোগ করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রশ্নে বারবার বলা হয়েছে যে সবার আগে জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। “এর পর, ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে চাই;” তিনি আরো বলেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণের পর সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, “আমরা প্রতিদিন নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণ করছি। এগুলো বিবেচনায় নিয়েই যথাসময়ে এ বিষয়ে জানাবো।”
অনলাইনে ক্লাস শুরুর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট যেহেতু সচল হয়েছে, সেহেতু এই বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কবে চালু হবে, জানা যাবে বুধবার
ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কবে ও কখন আবার চালু হবে, তা আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টার পর জানানো হবে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে একথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “ইউটিউব বিটিআরসির চিঠির জবাব দিতে রাজি, তবে ফেসবুকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এখনো কোনো জবাব পাইনি।”
“আগামীকাল (বুধবার, ৩১ জুলাই) ১১টা পর্যন্ত এর জন্য সময় আছে। সব দেখে আমরা বৈঠক করবো এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালুর বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানাতে পারবো;” যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
