যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের সমালোচনা করেছেন। রায়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেবার প্রচেষ্টা সম্পর্কিত এক মামলায় তাকে প্রেসিডেন্ট থাকার সুবাদে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে বাইডেন বলেন, “কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও নয়।“
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার প্রতি তিনি নিজে অটল থাকলেও ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টরা তা নাও থাকতে পারেন বলে তিনিও সতর্ক করেন। তিনি বলেন, “ডনাল্ড ট্রাম্পসহ যে কোনো প্রেসিডেন্ট এখন থেকে আইন উপেক্ষা করবেন।“
প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আদালতের মাধ্যমে "আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত আইনি নীতিমালার ওপর ধারাবাহিক আঘাত আসছে", যার সর্বশেষ উদাহরণ হল সোমবারের রায়। উদাহরণ হিসেবে তিনি গর্ভপাতের অধিকারের বিরুদ্ধে রায় এবং সিভিল রাইটস-আমলের ভোটের আইনের কথা উল্লেখ করেন এবং আদালতের এসব সিদ্ধান্ত "এই জাতির আইনের শাসনকে খর্ব করে" বলে অভিহিত করেন।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ক্ষমতায় থাকাকালীন দাপ্তরিক কাজের ক্ষেত্রে ট্রাম্পকে দায়মুক্তি দেয়া হলেও অনানুষ্ঠানিক কাজের জন্য তা প্রযোজ্য হবে না। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোন ধারায় মামলা করা যেতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আদালত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা নিম্ন আদালতকে হস্তান্তর করেছে।
আদালতের চলতি মেয়াদের শেষ দিনের ৬ বনাম ৩ ব্যবধানের রায় এটাই নিশ্চিত করেছে যে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই মামলার কার্যক্রমে আর তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ২০২০ এর রিম্যাচ হতে যাচ্ছে এবং এতে বাইডেনের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে লড়তে যাচ্ছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলে তার কোন ভূমিকা আছে বলে বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। তবে তিনি দাবী করে আসছেন যে ভোট গণনায় অনিয়মের কারণে তার চার বছরের মেয়াদ নষ্ট হয়েছে। সামনের নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফলের উপর তার ভবিষ্যত নির্ভর করছে। যদি তিনি জিতে যান তবে তিনি তার অ্যাটর্নি জেনারেলকে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য দেশের শীর্ষ প্রসিকিউটরকে নির্দেশ দিতে পারেন। আর নির্বাচনে হেরে গেলে তাকে পূর্বের নির্বাচনের জালিয়াতির অভিযোগে শীঘ্রই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
রায়ের সংবাদে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে উল্লাস প্রকাশ করে বলেন ট্রাম্প, "আমাদের সংবিধান ও গণতন্ত্রের জন্য (এটা) বড় জয়। একজন আমেরিকান হিসেবে আমি গর্বিত"
একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট তার মেয়াদ থাকাকালীন সময়ে নেওয়া দাপ্তরিক পদক্ষেপের কারণে ফৌজদারি অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন না তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে, এ বিষয়টি নিয়ে এবারই প্রথমবারের মতো রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।