অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গাজার খান ইউনিস থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাবার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল


বাচ্চা কোলে একজন নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনির সাথে ইসরায়েলি আদেশের পর খান ইউনিস ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ফটোঃ ১ জুলাই, ২০২৪।
বাচ্চা কোলে একজন নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনির সাথে ইসরায়েলি আদেশের পর খান ইউনিস ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ফটোঃ ১ জুলাই, ২০২৪।

গাজার খান ইউনিস এবং তার আশেপাশের এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাবার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এই আদেশ সম্ভবত দক্ষিণ গাজার এই শহরে নতুন ইসরায়েলি হামলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ইসরায়েল বছরের আগের দিকে অভিযান চালালে হাজার হাজার মানুষ বাস্তচ্যুত হয় এবং খান ইউনুইসের বেশির ভাগ ধ্বংস হয়।

“এটা আবার দেখাচ্ছে যে, গাজায় কোন নিরাপদ জায়গা নেই। বেসামরিক মানুষদের নিরাপত্তা দিতে আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন,” বলেন জাতীসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনি গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক।

খালি করার জন্য চিহ্নিত এলাকার একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, “চলে যাওয়ার আদেশের পর ভয় আর চরম উৎকণ্ঠা মানুষের মধ্যে চেপে বসেছে।” তিনি বলেন “ব্যাপক সংখ্যক বাসিন্দা বাস্তচ্যুত হয়েছেন।”

হাসপাতাল প্রধানের মুক্তি

চিকিৎসার জন্য গাজায় ফেরত আসা কয়েক ডজন ফিলিস্তিনির মুক্তির অংশ হিসেবে সোমবার গাজার প্রধান হাসপাতালের পরিচালককে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

মোহাম্মদ আবু সেলমিয়াকে নভেম্বর থেকে আটক করে রাখা হয়েছিল। তিনি গাজার শিফা হাসপাতালের প্রধান ছিলেন। সেখানে নভেম্বরে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালায় এবং তারা অভিযোগ করে যে, হামাস জঙ্গিরা হাসপাতালটিকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করছে।

Al-Shifa hospital director Mohammed Abu Salmiya who was detained by Israeli forces since November, is welcomed by relatives after his release alongside other detainees, at Nasser hopsital in Khan Yunis in the southern Gaza Strip July 1, 2024, amid the ong
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া নভেম্বর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ছিলেন। তার মুক্তির পরে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে আত্মীয়রা তাকে স্বাগত জানান। ১ জুলাই, ২০২৪।

হাসপাতালের কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রোগীদের বিপদে ফেলার পাশাপাশি আশ্রয় নিতে হাসপাতালে আসা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের বিপদে ফেলার অভিযোগ করেন।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে জঙ্গিরা সীমান্তবর্তী এলাকায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ হামলা চালানোর কথা জানান।

সামরিক বাহিনী জানায়, তারা কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে এবং অন্যগুলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে গিয়ে পড়েছে।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামে হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আরও বিস্তৃত অভিযান শুরু করার সাথে সাথে এই অঞ্চলে একটি সম্প্রসারিত সংঘাতের সম্ভাবনার কারণে উত্তেজনা এড়ানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যরা সতর্ক করেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার তার প্রতিজ্ঞা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই’। তিনি তার মন্ত্রিসভাকে বলেন, যতক্ষণ না জঙ্গিরা পরাজিত হয় এবং হামাসের হাতে থাকা ১২০ জন জিম্মিকে জীবিত বা মৃত ফেরত না পাঠানো হয়, ততক্ষণ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে।

নেতানিয়াহু বলেন, “সহজ সত্যটা সবাই জানে;” তিনি বলেন, ইসরায়েলের হাতে বন্দি শত শত ফিলিস্তিনির বিনিময়ে “আমাদের জিম্মিদের মুক্তির ক্ষেত্রে হামাসই একমাত্র বাধা।”

তবে অচল যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি, ইসরায়েল লড়াই এবং জিম্মি ও বন্দিদের বিনিময়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে হামাস স্থায়ীভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

XS
SM
MD
LG