পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবেশ দূষণ, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সমন্বিত প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেছেন, পরিবেশ দূষণের আন্তঃসীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বুধবার (২৬ জুন) ভূটানের রাজধানী থিম্পুতে দক্ষিণ এশিয়া পরিবেশ সহযোগিতা সংগঠনের (সাকেপ) ১৬তম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে বিদায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সাকেপের চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ১২টি আঞ্চলিক অনুদান প্রকল্প ও ১৮টি উদ্ভাবন অনুদান প্রকল্পের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করা যা বাংলাদেশ, ভূটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সাকেপের এই উদ্যোগগুলো বেসরকারি খাত, উদ্যোক্তা, একাডেমিয়া ও নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং জনসাধারণের খাতগুলোকেও জাতীয় নীতি, কৌশল ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
তিনি হিন্দুকুশ হিমালয়ের হিমবাহ গলে যাওয়া, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও জীবজন্তুদের অস্তিত্বের হুমকির কথা তুলে ধরেন। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের আহ্বান জানান।
গত ১৫ বছরে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের প্রতিষ্ঠা এবং সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারত্ব গঠন সক্রিয় পদক্ষেপের উদাহরণ।
বিদায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে সাবের হোসেন চৌধুরী ভুটানের জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী জেম শেরিংকে চেয়ারম্যানশিপ হস্তান্তর করেন। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জেম শেরিংয়ের নেতৃত্বে সাকেপ পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক প্রচেষ্টা ও কৌশলগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।
দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধ ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, আদর্শগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয়কে তুলে ধরে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সাকেপ পরিবেশগত সমস্যাগুলোর সমাধানের সাধারণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে এবং এই অঞ্চলে সব পরিবেশগত দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে।