বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে। হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা কমাতে পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, রবিবার (২৩ জুন) রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে সফলভাবে খালেদা জিয়ার বুকে পেসমেকার বসিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সন্ধ্যায় তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ম্যাডামের বুকে পেসমেকার বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি।” আগামী ৭২ ঘণ্টা খালেদা জিয়াকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, রবিবার বিকালে খালেদা জিয়ার পেসমেকার বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন চিকিৎসকরা। জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার হার্টে ব্লকেজ সমস্যা ছিলো। “পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ড তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে;” তিনি আরো জানান।
এর আগে, ২০২২ সালের ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে একাধিক ব্লক ধরা পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, শনিবার (২২ জুন) ভোরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর থেকে তার হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতার বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়। অবশেষে তার বুকে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, যেখানে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বারবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
২০২১ সালের নভেম্বরে তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
