ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আলোচনা করতে একটি কারিগরি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। “ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ; এই সম্পর্ক আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার;” তিনি আরো বলেন।
শনিবার (২২ জুন) নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। নরেন্দ্র মোদী জানান যে ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা সুবিধা চালু করবে। আর, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে রংপুরে একটি নতুন সহকারী হাইকমিশন খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
“বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই;” মোদী যোগ করেন। তিনি বলেন, সবুজ অংশীদারিত্ব, ডিজিটাল অংশীদারিত্ব, সুনীল অর্থনীতি এবং মহাকাশের মতো অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সম্পাদিত চুক্তির ফলে উভয় দেশই উপকৃত হবে।
“আমরা যোগাযোগ, বাণিজ্য ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি;” আরো বলেন নরেন্দ্র মোদী
দুই দেশে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেন, “বন্যা ব্যবস্থাপনা, আগাম সতর্কীকরণ, সুপেয় পানি প্রকল্পে আমরা সহযোগিতা করে আসছি। আমরা ১৯৯৬ সালের ‘গঙ্গা পানি চুক্তি’ নবায়নের জন্য কারিগরি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরো জোরদার করার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে বিশদ আলোচনা হয়েছে বলে জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, উভয় দেশ সন্ত্রাস দমন, উগ্রবাদ হ্রাস ও সীমান্তের শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। “ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ এবং ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়;” যোগ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদী বলেন, “সোনার বাংলায় নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই।”
‘ভারত বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেশী’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,“ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার।”
শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দেয়া যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উভয় পক্ষ তাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য পরস্পরকে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। “আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি;” আরো বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, “আজ আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে, যেখানে আমরা রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও যোগাযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এ বছরের জানুয়ারিতে তার নতুন সরকার গঠনের পর এটি তার প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর। তিনি বলেন, “ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেয়া ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত মূল্য দেয়।”