বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইস্যু পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে তাকাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডোনাল্ড লু বলেন, আমাদের মধ্যে বিশ্বাস পুনর্নির্মাণের জন্য আমি গত দুই দিন ধরে বাংলাদেশ সফর করছি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং সহিংসতা মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল।
তিনি বলেন, “আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই, পেছনের দিকে নয়।”
ডোনাল্ড লু বলেন, আমাদের সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য উপায় বের করতে চাই। এ জন্য আমি (পররাষ্ট্র) মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আছে। যেমন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম আইনের সংস্কার, মানবাধিকার এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কার। এ সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আমাদের ইতিবাচক দিক নিয়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা নতুন বিনিয়োগের কথা বলেছি। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করবে, এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। ক্লিন এনার্জি নিয়ে কথা বলেছি। সর্বশেষ যে বিষয়টি নিয়ে আমি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, সেটা হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। আমরা যেটা করতে পারি সরকারের স্বচ্ছতা, সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মাধ্যমে। আমরা করসীমা বাড়ানোর কথা বলেছি, যাতে বাংলাদেশ সেখান থেকে উপকৃত হতে পারে।
একই দিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু। পরে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে পৃথকভাবে আলোচনা করেন তিনি।
এদিকে পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সম্পর্কোন্নয়নের জন্য লু বাংলাদেশে এসেছেন।
জিএসপি সুবিধা বিষয়ে তিনি বলেন, এই কর্মসূচি পুনরায় চালুর সময় বাংলাদেশকে এটি ফেরত পেতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়াও, বাংলাদেশের রিজার্ভ শক্তিশালীকরণে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দিতে চায় বলেও জানান হাছান মাহমুদ।
বৈঠকে কর ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু ও ফিলিস্তিনে গণহত্যা নিয়েও কথা বলেন তারা।
হাছান মাহমুদ বলেন, “তিনি (লু) আমাকে বলেছেন, তারাও গাজায় শান্তি দেখতে চান। তারা এ নিয়ে আশাবাদী এবং সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছেন।”
মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ডোনাল্ড লু।