অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে


এ বছর বাংলাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।
এ বছর বাংলাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে রবিবার (১২ মে) ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।

গত বছর (২০২৩ সালে) পাসের হার ছিলো ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি, জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এবছর ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

শেখ হাসিনার প্রশ্ন

তবে, পরীক্ষায় ছেলেদের সংখ্যা কম হওয়া এবং তারা ফলাফলে মেয়েদের তুলনায় পিছিয়ে পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “ছেলেদের সংখ্যা কমার কথা নয়; মেয়েদের সমান হওয়া উচিৎ।”

রবিবার (১২ মে) সকালে পরীক্ষার ফল প্রকাশ কালে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং কেন ছাত্রের সংখ্যা কমছে তার কারণ খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও শিক্ষা বোর্ডগুলোকে নির্দেশ দেন।

“ছেলেদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করার জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। পাশের হারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে; এটা ভালো কথা। কিন্তু আমাদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে;” বলেন শেখ হাসিনা।

ফলাফলের পরিসংখ্যান

প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৭৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, ময়মনসিংহ ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও যশোরে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এদিকে, মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ১৬ লাখ ৬ হাজার ৩৯৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ হাজার ৪৫ হাজার ৬৭৮ জন। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫।

মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিলো ২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২০৬।

কারিগরি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ১ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৯ হাজার ৭২১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৭৮ জন।

এবছর ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭।
এবছর ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭।

এর আগে, চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলের সারসংক্ষেপ ও পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন তিনি।

এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন। আর মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা যথাক্রমে ১২ ও ২০ মার্চ শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাসের হার: যশোর বোর্ডে সর্বোচ্চ

এ বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হারে শীর্ষে যশোর শিক্ষা বোর্ড এবং সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে।

ঘোষিত ফলাফল থেকে জানা গেছে যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।

কারিগরি থেকে মাদ্রাসা এগিয়ে

এই বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলে গত বছরের তুলনায় বেশ উন্নতি হয়েছে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি দুটোই বেড়েছে।

এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিলো ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিলো ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিলো ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এছাড়া জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। এ বছর মাদ্রাসা বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজার ২০৬ জন, যা গত বছর ছিলো ৬ হাজার ২১৩ জন।

অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলে দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। এ বছর কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা গত বছর ছিলো ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

চলতি বছর কারিগরি বোর্ডের আওতায় ৪ হাজার ৭৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে. যা গত বছর ছিলো ১৮ হাজার ১৪৫ জন।

ফল যেভাবে জানা যাবে

অনলাইনে বা এসএমএস এর মাধ্যমে ফল জানতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। এসএমএসের মাধ্যমে ফল পেতে প্রার্থীদের এসএসসি (SSC), বোর্ডের নামের প্রথম ৩ অক্ষর, তারপর প্রার্থীর রোল নম্বর ও বছর লিখতে হবে এবং 16222 নম্বরে বার্তাটি পাঠাতে হবে।

একজন পরীক্ষার্থী যদি ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষা দিয়ে থাকেন এবং তার রোল নম্বর যদি 123456 হয়ে থাকে তাহলে ফল পেতে তাকে ‘SSC Dha 123456 2024’ লিখে 16222 নম্বরে বার্তা পাঠাতে হবে।

অনলাইনে ফল পাওয়ার জন্য http://www.educationboardresults.gov.bd/ এই ঠিকানায় যেতে হবে।

XS
SM
MD
LG