বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন। শুক্রবার (১০ মে) দিবাগত রাত ২টার পর রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
দল ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হায়দার আকবর খান ধানমন্ডির নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যায় বেশি অসুস্থবোধ করলে তাকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।
হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ এবং লেখক। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি ছিলেন সম্মুখ সারির নেতা। ২০২১ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরষ্কারে ভূষিত হন।
হায়দার আকবর খান রনো ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। এরপর থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া, রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন, সাহিত্য ও বিজ্ঞান বিষয়ে বেশ কিছু সংখ্যক বই লিখেছেন হায়দার আকবর খান রনো।
আগামী সোমবার (১৩ মে) সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১১ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় এই শোক জানানো হয়। শোক বার্তায় বলা হয়, মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।।
বিএনপি মহাসচিবের শোক
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১১ মে) এক শোকবার্তায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, “হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুর সংবাদে তার পরিবারের সদস্যদের মতো আমিও গভীরভাবে মর্মাহত।”
মির্জা ফখরুল বলেন, হায়দার আকবর খান রনো পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন ত্যাগী ও সত্যিকারের নিবেদিতপ্রাণ দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তিনি দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
হায়দার আকবর খান রনোর চিরবিদায়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন। আমৃত্যু এই গুণী রাজনীতিবিদ গণমানুষের মুক্তির পক্ষে নিরন্তর সংগ্রাম করে গেছেন।
শোকবার্তায় তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সময়ে তার মতো রাজনীতিকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে গভীর দুঃখের ও বেদনার। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”