মানুষের শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেই বলা হয় জ্বর এসেছে। সাধারণত মানব শরীর ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। তাপমাত্রা এর বেশি হলে, শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। কলকাতাতে এখন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির বেশি। তাপমাত্রা আরো ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
তাপমাত্রা যত বাড়ছে, তত বাড়ছে অসুস্থতা। গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া, চরম আর্দ্রতায় হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। আশঙ্কা বেড়েছে হার্ট অ্যাটাকের। এছাড়া, ডিহাইড্রেশন, ডায়ারিয়া, মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ছে তাপমানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। তীব্র রোদে ক্ষতি হচ্ছে চোখের। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি রেটিনার ক্ষতি করছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সামনের দুই-এক দিনে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা ৪৪-৪৫ ডিগ্রিতে পৌঁছে যাবে। এই চরম তাপমাত্রা সহ্য করা তখন মুশকিল হয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানব শরীর ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা (১০৪-১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) সহ্য করতে পারে। তাও নির্ভর করে শরীরের মেটাবলিক রেট, হার্টরেট ও ইমিউনিটির ওপর। শিশু ও বয়স্কদের পক্ষে বা কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে এই তীব্র তাপ সহ্য করা মুশকিল হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের একটি রিপোর্টে নাসা জানিয়েছিলো, ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত মানব শরীর মোটামুটি সহ্য করে নেয়। তবে, আর্দ্রতা যদি ৫০ শতাংশের নিচে থাকে, তবে আর একটু বেশি তাপমাত্রা সহ্য করা যায়।
নাসা বলেছিলো, বেশি তাপমাত্রায় ঘাম হয়, তার মাধ্যমেও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে, হাইপোথ্যালামাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের একটা সীমা আছে। বেশি তাপমাত্রা, অস্বাভাবিক আর্দ্রতায় শরীরে হাইপারথার্মিয়া দেখা দেয়। তখন দুর্বল, বমি ভাব, তেষ্টায় বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়া, ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা তৈরি হয় মানব শরীরে। এছাড়া, সোডিয়াম, পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। তখন বিপদের ঝুঁকি বাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে, হঠাৎ করে হিটস্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।