অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

‘বাংলাদেশকে অন্য দেশের অধীনতার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে’, অভিযোগ রিজভীর


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি।

বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে প্রতিবেশী দেশের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে দুস্থদের মাঝে ঈদ-বস্ত্র বিতরণ করেন। এ সময় তিনি এ অভিযোগ করেন। “আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি দমনের চেষ্টা করছে তারা;” বলেন রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, যাদের সামর্থ্য আছে তারা সাধারণত নিকটাত্মীয়, গরিব ও অভাবী মানুষদের খাওয়ানোর জন্য ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। এটি দেশে দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত সংস্কৃতি ও ধর্মীয় প্রথা। এ বছর কিছু সংগঠনকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বা বাইরে ইফতার পার্টি করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“তারা (সরকার) এটা পছন্দ করে না। তারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত হানছে। প্রধানমন্ত্রী তার প্রভুদের ইচ্ছা পূরণের জন্য এসব করছেন;” অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি আরো বলেন যে বিএনপি প্রাথমিকভাবে বিষয়টি বুঝতে পারেনি। “কিন্তু আমরা যদি গভীরভাবে চিন্তা করি, তাহলে বুঝতে পারি, কীভাবে তারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করছে; তিনি যোগ করেন।

বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকের সমর্থনে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং মূল্যবোধকে সম্মান করে না ভারত। “আমরা কেন তাদের শাড়ি বা টুথপেস্ট কিনবো;” বলেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ভারতের সীমান্ত রক্ষীরা নিয়মিতভাবে সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করছে। সীমান্ত হত্যা নিয়ে চুক্তি আছে, প্রোটোকল আছে। কিন্তু বিএসএফ তাতে মাথা ঘামায় না। তারা প্রায়ই সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করছে।

ভারতের নাম উল্লেখ না করে রিজভী আরো বলেন, তারা দাবি করে, তারা একটি গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া স্বীকার করে না। এমনকি তারা বাংলাদেশিদের সম্মান করে না। তারা কেবল একটি রাজনৈতিক দলের পাশে দাঁড়িয়েছে।

রিজভী প্রশ্ন তোলেন, লোকেরা কেন তাদের পণ্য ব্যবহার করবে, যখন তারা তাদের ইচ্ছাকে সম্মান করে না এবং একটি দলের স্বার্থে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করে।

হাছান মাহমুদ: ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে বাজার অস্থিতিশীল করতে চায় বিএনপি’

এদিকে, শনিবার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চায় বিএনপি। “দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য;” বলেন হাছান মাহমুদ।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্তে বৈধভাবে কিছু সীমান্ত বাণিজ্য হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি।

“বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানো, যাতে জনগণের ভোগান্তি হয়;” তিনি আরো বলেন।

বিএনপি নেতাদের প্রতি হাছান মাহমুদ বলেন, “আপনারা ভারত থেকে আসা পিয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেবেন; এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কিছু নয়।”

“ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক যারা দিয়েছে, তাদের সঙ্গে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শাল জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তার শালটি ভারত থেকে কেনা, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কেনা আমি জানি না;” বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার (২৭ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপি নেতাদের জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, “এদেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নে বিএনপি প্রধান বাধা।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতাদের উচিত অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া। “কিন্তু তারা তা না করে বরাবরের মতো অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিচ্ছেন;” বলেন ওবায়দুল কাদের।

গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

XS
SM
MD
LG