শনিবার সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান প্রাইমারিতে বিজয়ী হয়ে দলের মনোনয়ন পাবার পথে আরও এক ধাপ এগোলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। জাতিসংঘের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিকে সহজেই পরাজিত করে টানা তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পাবার পথ প্রশস্ত করলেন তিনি।
ট্রাম্প এর আগে আইওয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নেভাদা ও ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস-এ প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ছিলেন হ্যালি। তিনি বলেছেন, হেরে গেলেও, ২০১১-১৭ সাল পর্যন্ত যে রাজ্যে গভর্নর ছিলেন সেখান থেকে তিনি কোথাও যাবেন না।
ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে আরেক দফা লড়াই ক্রমেই অনিবার্য হয়ে উঠছে। নিকি হ্যালি অন্তত আগামী ৫ মার্চের সুপার টিউসডে প্রাইমারি পর্যন্ত ভোটের দৌড়ে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। এ নাগাদ তিনি নিজের রাজ্যেও ট্রাম্পের গতি হ্রাস করতে পারেনি। নিকি হ্যালি তার প্রচারণায় যুক্তি দেখিয়েছেন যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তাকে বাইডেনের বিপক্ষে ভোটে বাধাগ্রস্ত করবে।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় রাজ্যব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এপি (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস) ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে। সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান প্রাইমারি ভোটারদের নিয়ে করা এপি ভোটকাস্টের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ঐ ঘোষণা দেয়া হয়। প্রাক-নির্বাচনী এই জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজ্য জুড়ে হ্যালির চেয়ে ট্রাম্প অনেকাংশেই এগিয়ে আছেন।
ভোটগ্রহণ শেষে বিজয় ভাষণে ট্রাম্প বলেন, "রিপাবলিকান পার্টিকে এতটা ঐক্যবদ্ধ আগে কখনো দেখিনি।"
তিনি আরও বলেন, মিনিট ১৫ এই জয় উদযাপন করা যেতে পারে, তারপর তাদের কাজে ফিরতে হবে।
ঐতিহাসিকভাবে রিপাবলিকানদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য প্রাথমিক নির্বাচনী সমীক্ষা সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারি। ১৯৮০ সাল থেকে একটি প্রাইমারি বাদে সবকটিতেই সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারিতে বিজয়ী রিপাবলিকান নেতা তার দলের মনো্নয়ন পেয়েছেন। শুধু ২০১২ সালে নিউট গিনগ্রিচের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটেছিল।
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রায় এক ঘণ্টা পর হ্যালি মঞ্চে উঠে বলেন, "আজ যা দেখলাম তা হলো দেশের দিকনির্দেশনা নিয়ে সাউথ ক্যারোলাইনার হতাশা। দেশব্যাপী আমি এই একই হতাশা দেখেছি।"
এদিকে ট্রাম্প এবং বাইডেন ইতোমধ্যে এমন আচরণ করছেন যেন তারা নভেম্বরে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প ও তার মিত্ররা যুক্তি দেখিয়েছেন, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল করে তুলেছেন। তারা বাইডেন সরকারকে আফগানিস্থান থেকে বিশৃঙ্খল ভাবে প্রত্যাহার, ইউক্রেনের যুদ্ধ সহায়তা, প্রেসিডেন্টের মেয়াদের শুরুতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী নিয়ে বার বার কোনঠাসা করে তুলেছেন। তাছাড়া, ৮১ বছর বয়সী বাইডেন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে বাইডেন দেশজুড়ে তার সাম্প্রতিক তহবিল সংগ্রহের জন্য সফর বাড়িয়েছেন। তিনি ট্রাম্পকে সরাসরি আক্রমণ শুরু করেছেন। তিনি ট্রাম্প এবং তার "মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন" আন্দোলনকে জাতির প্রতিষ্ঠা নীতির জন্য মারাত্মক হুমকি বলে অভিহিত করেছেন।