যুক্তরাষ্ট্রের মতো রাজনৈতিকভাবে মেরুকৃত একটি দেশে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমেরিকানরা একটি ইস্যুতে সহমত হবেন বলে ধারণা, আর সেটি হল গণতন্ত্রের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ এবং দেশের ভবিষ্যতের উপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কীভাবে ও কতখানি প্রভাব ফেলবে সেই বিষয়টি।
দেশকে এমন হুমকির মুখে কে ফেলছেন, তা নিয়ে তাঁরা শুধু একমত হবেন না।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের ৬২ শতাংশ বলছে যে, আগামী শরতকালের ভোটে কে জিতছে তার উপর নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র কতটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ডেমোক্র্যাট (৭২ শতাংশ) ও রিপাবলিকানদের (৫৫ শতাংশ) বেশিরভাগ মানুষই এমনটা ভাবছেন, তবে তাদের এমনটি ভাববার কারণগুলি ভিন্ন।
রিপাবলিকান দলের সম্মুখসারির প্রতিদ্বন্দ্বি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করার পর ও দফতরে ক্ষমতার অপব্যবহার করার কথা অস্বীকার করতে নাকচ পর যদি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ ভয়াবহ হতে পারে, এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) পরে ভাষ্যকে নাকচ করে দেয়া চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা নির্বাচনী গোলযোগ ও নথি সংক্রান্ত মামলা দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আইনিভাবে পর্যুদস্ত করতে বাইডেন ফেডারেল সরকারকে হাতিয়ার বানিয়েছেন। তিনি বাইডেনকে “আমেরিকার গণতন্ত্রের ধ্বংসকারী” বলে অভিহিত করেছেন।
এই পটভূমিতে উক্ত সমীক্ষায় উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় অর্ধেক (৫১ শতাংশ) বলেছে, গণতন্ত্র খুব ভাল ভাবে নয় বা বলা যায় যায় “একেবারেই ভালভাবে”কাজ করছে না।
এপি-এনওআরসির সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাটদের ৮৭ শতাংশ ও নিরপেক্ষদের ৫৪ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প যদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এদিকে, ৮২ শতাংশ রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন, বাইডেন পুনরায় জয়ী হলে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়বে। নিরপেক্ষদের ৫৬ শতাংশ এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট লিবারম্যন বিশ্বের অন্যত্র গণতন্ত্রের পতন ও গণতন্ত্রের ধ্বংসের পিছনে যে অভিন্ন বিষয়গুলি কাজ করে থাকে তা নিয়ে সমীক্ষা করেছেন।
এই সূচকগুলি হল, মেরুকরণ, ক্রমবর্ধমান জাতিগোষ্ঠীগত বা বর্ণগত বৈরিতা, ঊর্ধ্বমুখী অর্থনৈতিক অসাম্য ও কোনও দেশের কার্যনির্বাহী কর্মকর্তাদের হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ।
তিনি বলেন, “এখন কয়েক বছর ধরে এই বিষয়গুলির চারটিই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য, বস্তুত তা ইতিহাসে এই প্রথম। সুতরাং আমরা এমন একটা সময়ে রয়েছি যেটি গণতন্ত্রের সামনে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।”