অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মহুয়া মৈত্রর সংসদ সদস্য পদ খারিজের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শুক্রবার


তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র।

অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে গত শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর এথিক্স কমিটির প্রস্তাব মেনে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে।

এই বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং এথিক্স কমিটির এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে মামলা দায়ের করেন মহুয়া মৈত্র।

বুধবার ১৩ ডিসেম্বর মহুয়া মৈত্রর তরফে সেই মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানানো হলেও বিচারপতি এস কে কওলের বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে দেয়।

শুক্রবার ১৫ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি হতে চলেছে।

মোট ১৫ পাতার আবেদন পত্র জমা দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বহিষ্কৃত সংসদ সদস্য। তাতে বেশ কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং এসভি ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার মহুয়ার আবেদন শুনবেন বলে জানা গেছে। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার ১৪ ডিসেম্বর অথবা শুক্রবার ভারতীয় সময় দুপুর ২টোয় শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্রর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।

বৃহস্পতিবার সিঙ্গল বেঞ্চে দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও একই আবেদন জানিয়েছিলেন মৈত্র। তবে সেই আবেদনও নামঞ্জুর করে আদালত।

মহুয়া মৈত্র লোকসভার এথিক্স কমিটির বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাকে বহিষ্কার করার অভিযোগ তুলেছেন। সেই অভিযোগ ঠিক না ভুল, সেটাই এবার খতিয়ে দেখবে শীর্ষ আদালত।

এথিক্স কমিটির তদন্ত রিপোর্ট লোকসভায় পেশ হওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমে কীভাবে ফাঁস হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মৈত্র। একই সঙ্গে এথিক্স কমিটির এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

আদালতে জমা দেওয়া আবেদনে মৈত্রর আইনজীবীর দাবি, "সাংসদকে বহিষ্কারের ক্ষমতা একমাত্র রয়েছে সংসদের স্বাধিকার রক্ষা কমিটির। এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।" তদন্তের নামে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণের প্রসঙ্গটিও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল লোকসভায় প্রশ্ন করার জন্য তিনি শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে ঘুষ বাবদ নগদ ও নানা ধরনের উপহার নিয়েছেন।

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এই ব্যাপারে প্রথম সরব হন।

গত ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদরাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও লোকসভার স্পিকারকে চিঠি পাঠান। সেখানে আইনজীবী দেহাদরাই মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ করেন।

তবে মহুয়া মৈত্র প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।মৈত্রর দাবি ছিল, তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে কুৎসা প্রচার করা হচ্ছে।

অবশেষে গত শুক্রবার মৈত্রর সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয় লোকসভায়। ভারতের সংসদের নিয়মানুযায়ী ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে তৃণমূল সংসদ সদস্যের সংসদ সদস্য পদ এদিন খারিজ হয়ে যায়।

গত ৩ ডিসেম্বর থেকে সংসদে শুরু হয় শীতকালীন অধিবেশন। গত শুক্রবার মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি রিপোর্ট পেশ করে। তৃণমূল, কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলির দাবি ছিল, রিপোর্ট পড়ার জন্য সময় দেওয়া হোক। সেইসঙ্গে মৈত্রকে নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ দিন স্পিকার।

বিরোধীদের এই অভিযোগ নাকচ করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি বলেন, মৈত্র এথিক্স কমিটির কাছে নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর আধঘণ্টা এই বিষয়ে আলোচনা-বিতর্ক হয়।

শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর যখন এই বিষয়ে বিতর্ক চলছিল তখনই এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস সংসদ সদস্য অধীররঞ্জন চৌধুরী। তার কথায়, “মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে কোনও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তার আগেই তাকে শাস্তি দিয়ে দেওয়া হল।”

XS
SM
MD
LG