ভারতের রাজধানী দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার মারাত্মক বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো বলেই জানিয়েছেন পরিবেশবিদেরা। খড়কুটো পোড়ানো রুখতে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারকেই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, খড় পোড়া দূষণের জন্য শুধুমাত্র চাষিদের দায়ী করে তাদেরই খলনায়ক বানানো হচ্ছে। কীভাবে এই ফসল পোড়ানো বন্ধ করা যাবে সে নিয়ে ভাবা উচিত।
কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, ফসলের গোড়া নষ্ট করা নিষিদ্ধ হলে কৃষিকাজ ধাক্কা খাবে। এ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নেই কেন্দ্রের।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসকে কৌল ও বিচারপতি এস ধুলিয়ার বেঞ্চ জানিয়েছে, চাষিদের উপর দোষ না চাপিয়ে কীভাবে আগাছা নষ্ট করা যাবে সে উপায় বের করা উচিত পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকারের। কারণ এই খড়পোড়া ধোঁয়াই দিল্লির মাত্রাহীন দূষণের অন্যতম কারণ।
পাঞ্জাব সরকার দাবি করেছিল, ফসলের গোড়া তুলে ফেলার জন্য ১৮ হাজার যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই কাজে কেন্দ্রীয় সাহায্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে হরিয়াণা সরকারের দাবি, আগাছা তোলার যন্ত্রের দাম দু’হাজার টাকা। তাই চাষিরা কিনতে রাজি হচ্ছেন না। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যন্ত্র কেনার জন্য চাষিদের হাতে টাকা দিতে হবে দুই রাজ্যের সরকারকেই। এই যন্ত্র কিনে বিকল্প উপায়ে যাতে ফসলের গোড়া নষ্ট করা যায় সে ব্যবস্থা সরকারি উদ্যোগেই করতে হবে। তা না হলে ফসলের গোড়া নষ্ট করার অন্য বিকল্প উপায় ভাবতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দিল্লির দূষণের পিছনে অন্যতম বড় কারণ চাষের খেতে শুকনো খড় পোড়ানো ধোঁয়া। লাগোয়া রাজ্য পঞ্জাব, হরিয়াণা থেকে ওই ধোঁয়া এসে জমছে দিল্লির পরিবেশে। দিল্লি-সহ নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রামের আকাশ ভরে গেছে ওই খড় পোড়া ধোঁয়াতে। এই ধোঁয়ার সঙ্গেই যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মাণ সংস্থাগুলির বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিলে গিয়ে ঘন ধোঁয়াশা তৈরি করছে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অন্তত আড়াই গুণ বেশি। শীতের মুখে ভাসমান এই কণার পরিমাণই চার গুণ ছাড়িয়ে গেছে।