মঙ্গলবার ৭ নভেম্বর ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট হবে মিজোরাম ও ছত্তীসগড়ে। তার ঠিক আগের দিন সোমবার ভারতীয় সময় বিকেলে আইইডি বিস্ফোরণে ছত্তীসগড়ে আহত হয়েছেন বিএসএফ জওয়ান ও ভোটকর্মীরা। এই ছত্তীসগড়েই শুক্রবার ৩ নভেম্বর নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে জাতি সমীক্ষা নিয়ে নতুন মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি-র এই শীর্ষ নেতার কথায়, "বিজেপি, নরেন্দ্র মোদী সরকার জাতি সমীক্ষার বিরোধী নয়। বিজেপি একটি সর্বভারতীয় দল। আমাদের অনেক ভাবনাচিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সকলের মত নিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।"
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কথা বলার পর বিজেপির ওবিসি মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি ড. নিখিল আনন্দ-ও একই কথা বলেন। তার বক্তব্য, "বিজেপি কখনও জাতি সমীক্ষার বিরোধী ছিল না। বিহারে নীতীশ কুমারের সরকারের কাস্ট সেন্সাস-এর সিদ্ধান্তের শরিক বিজেপিও ছিল। ঘটনাচক্রে সেন্সাস শুরু হয় তিনি বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পর।"
কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির ওবিসি মোর্চার নেতা জাতি সমীক্ষা নিয়ে যে কথা বলেছেন তা দলের এতদিনের ঘোষিত অবস্থানের বিপরীত।
বিহারে কাস্ট সেন্সাস করার আগে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে গোটা দেশেই তা করার আর্জি জানিয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সেই আর্জিতে সাড়া দেননি মোদী-শাহই। ওবিসি সংরক্ষণের দাবি নিয়ে প্রকাশ্য সভায় বিরোধীদের সমালোচনায় মুখর হন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ছত্তীসগড়ে বিধানসভা ভোটের প্রচারেও প্রধানমন্ত্রী কাস্ট সেন্সাস এবং ওবিসি সংরক্ষণের দাবি নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মূলত নিশানা করেন কংগ্রেসকে।
দেশে জনগণনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই করে থাকে। করোনার জন্য এবার জনগণনা এখনও হয়নি। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তা ২০২১-হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। গণনা কবে হবে, আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। অমিত শাহের শুক্রবারের বক্তব্যের পর জনগণনার সম্ভাবনা রাজনৈতিক চর্চায় উঠে এসেছে।
কংগ্রেসের দাবি, কাস্ট সেন্সাস এবং ওবিসি সংরক্ষণের দাবি মানুষের সমর্থন পাচ্ছে, ভোটের মুখে তা টের পেয়েছে বিজেপি। ছত্তীসগড়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় জনসংখ্যার ৭০-৭৫ শতাংশ দলিত, আদিবাসী এবং ওবিসি। বিরোধীদের কাস্ট সেন্সাস-এর দাবি এই ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়া অসম্ভব নয়।