সাত বছরের এক বালক খেলার সময়ে সূঁচ গিলে ফেলেছিল। ৪ ইঞ্চি লম্বা এবং মোটা সূঁচটি এমন অদ্ভুতভাবে আটকে গিয়েছিল ফুসফুসের গভীরে যে শিশুটির প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছিল।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল ভারতের দিল্লির এইমস হাসপাতালে। তখন তার কাশির সঙ্গে দমকে দমকে রক্ত বেরোচ্ছে। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার বাম ফুসফুসের গভীরে একটি সূঁচ ঢুকে আছে। সেটি এমনভাবে আটকে রয়েছে, সাধারণত যে পদ্ধতিতে এমন ধরনের সমস্যার সমাধান করা হয় তা কার্যকর হবে না।
দিল্লি এইমসের চিকিৎসকরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সহায়তায় মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে আনেন বালকটিকে। বাজার থেকে কিনে আনা হয় চুম্বক। তারপর সেই চুম্বককে সুতো আর রবার ব্যান্ডের সাহায্যে বেঁধে চিকিৎসকরা তৈরি করে ফেলেছিলেন নতুন রকমের চিকিৎসা সামগ্রী। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সেই চুম্বক ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করিয়ে বের করে আনা হয় সূঁচটিকে।
কেসটি আসার পর চিন্তিত হয়ে পড়েন পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা। সকলেই বুঝতে পারেন, এক্ষেত্রে একেবারে অন্য রকম কোনও পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। এরপরেই হাসপাতালে সার্জিকাল টিম, টেকনিক্যাল অফিসারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে। তারপর বাজার থেকে কিনে আনা হয় চার মিলিমিটার লম্বা এবং ১.৫ মিলিমিটার পুরু একটি চুম্বক।
প্রযুক্তি বিভাগের কর্মীদের সহায়তায় সুতো এবং রবার ব্যান্ডের সাহায্যে একটি লাঠি জাতীয় জিনিসের সঙ্গে সেই চুম্বক বেঁধে এন্ডোস্কপি করে তা প্রবেশ করানো হয় শিশুটির ফুসফুসের গভীরে। প্রত্যাশা মতোই সেই চুম্বকের টানে তার গায়ে আটকে যায় সূঁচটি। তারপর খুব সন্তর্পণে বের করে আনা হয় চুম্বকে আটকানো সূঁচ।
এইমস-এর চিকিৎসকদের চেষ্টা এবং বুদ্ধিমত্তায় শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে গিয়েছে শিশুটি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন এই পদ্ধতি যদি কার্যকর না হত তাহলে বুকের অংশ কেটে ফুসফুসে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করে আনতে হত সূঁচটিকে। সাত বছরের শিশুটির পক্ষে সেই অস্ত্রোপচারের ধাক্কা সামলানো বেশ কঠিন হত বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।