ভারতে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রথম দফা শুরুর আর মাত্র সাত দিন বাকি। ৭ নভেম্বর ছত্তীসগড়ে প্রথম দফার ভোট। ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ৫টি রাজ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দেশের বিজেপি বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের শরিকদের মধ্যে আসন নিয়ে এখনও মতানৈক্য চলছে। দীর্ঘদিনের সঙ্গী বাম দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ চরমে উঠেছে। একাধিক জোট নেতার মতে, কংগ্রেস ধরেই নিয়েছে, মিজোরাম বাদে বাকি চার রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আসছে। তাই শরিকদের উপেক্ষা করছে।
ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, 'ইন্ডিয়া' জোট তৈরি হয়েছে লোকসভা ভোটের জন্য। অন্যদিকে, জোটের অন্যান্য শরিক দল সমাজবাদী পার্টি, জনতা দল ইউনাইটেড, সিপিএম, সিপিআই-এর বক্তব্য, বিগত বিধানসভা নির্বাচনগুলিতেও কংগ্রেস অন্য দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হল সিপিএম ও সিপিআই। রাজস্থানে পাঁচ বছর আগে সিপিএম-এর তিন বিধায়ক কংগ্রেসের পাশে ছিল। রাজ্যে কৃষক আন্দোলনেও দুই দল একসঙ্গে থেকেছে। কিন্তু রাজ্য কংগ্রেস এবার চাহিদা মতো আসন দিতে চাইছে না।
মধ্য প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধকে প্রচারের বিষয় করে তুলেছে বিজেপি। বিজেপি শিবির বলছে, ভোট আসতেই কংগ্রেসের নেতৃত্ব করার মেজাজ প্রকাশ পেয়েছে।
মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি কমলনাথ সমাজবাদী পার্টিকে পাঁচটি আসন ছাড়তে নারাজ। তিনি ওই দলের প্রধান অখিলেশ যাদবকে 'অখিলেশ ভকিলেশ' বলে কটাক্ষ করেছেন। তার জবাবে সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেস-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ১৫টি আসনে প্রার্থী দিয়ে দিয়েছে। সামান্য ভোট কেটে দিলেই ওই আসনগুলিতে কংগ্রেসের ভরাডুবি হবে।
সোমবার ৩০ অক্টোবর রাজধানী দিল্লিতে সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ ও ছত্তীসগড়ে তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। রাজস্থানে ১৭টি এবং মধ্য প্রদেশ ও ছত্তীসগড়ে যথাক্রমে তিন ও চারটি আসনে লড়াই করবে। তেলেঙ্গানা নিয়ে সিপিএম এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। রাজস্থান ও ছত্তীসগড়ে সিপিআই লড়াই করবে যথাক্রমে ১৭ ও ২২টি করে আসনে।
এদিকে, পাঁচ রাজ্যে বেশিরভাগ আসনে প্রার্থী দিয়েছে আম আদমি পার্টি। আপ প্রচার চালাচ্ছে পুরোদমে। বেশিরভাগ আসনে তাদের লড়াই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
লড়াইয়ে রয়েছে এনসিপি। দলের সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার গত সপ্তাহে রাজধানী দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস নেতৃত্বকে আরও নমনীয় হতে অনুরোধ করেন তিনি। পাওয়ারের বক্তব্য, তাহলে লোকসভায় আসন সমঝোতা আরও সহজ হয়ে যাবে।
সোমবার ৩০ অক্টোবর একই কথা বলেছেন সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তার বক্তব্য, 'ইন্ডিয়া' জোট লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি হয়েছে ঠিক কথা। তাই বলে বিধানসভা ভোটকে উপেক্ষা করা ঠিক হচ্ছে না। ইয়েচুরি সরব হন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস নেতারা আসন ছাড়তে নারাজ, অভিযোগ করেন সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক।
দিল্লিতে ইয়েচুরির সাংবাদিক বৈঠকের পর কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ট্যুইট করে আক্ষেপ করেছেন, বিধানসভার ভোটে 'ইন্ডিয়া' জোটের মধ্যে বোঝাপড়া না হওয়ায়।