আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিত ভারতের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন সিইও নারায়ণ মূর্তি, ইনফোসিস-এর প্রাক্তন সিএফও মোহনদাস পাইয়ের সঙ্গে একটি পডকাস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সেই আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ভারতের উৎপাদনশীলতা অনেক কম। উৎপাদনশীলতার নিরিখে বিশ্বে ভারত র্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। চীন, জাপান, জার্মানির সঙ্গে ভারতের এই ফারাক তৈরি হয়েছে একমাত্র কর্মসংস্কৃতির কারণে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই সব দেশের মানুষ সুনিয়োজিতভাবে অধিক সময় কাজ করেছেন।
এই অনুষ্ঠানে নারায়ণ মূর্তি বলেছেন, দেশের নতুন প্রজন্মের উচিত সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। তবেই দেশে কর্মসংস্কৃতির পরিবেশের উন্নতি ঘটবে এবং বিশ্ব মঞ্চে অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে পারবে ভারত।
তার কথায়, “আমার অনুরোধ হল, দেশের নতুন প্রজন্ম তথা ইয়ংস্টাররা বলুক, এটা আমাদের দেশ, আমরা সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই জার্মান ও জাপানিরা করেছিলেন।”
নারায়ণ মূর্তির বক্তব্য, নতুন প্রজন্ম যদি আরও বেশি সময় কাজ না করে তাহলে তথাকথিত উন্নত দেশগুলিকে ভারত ছুঁতেই পারবে না। কারণ তারা পরিশ্রম করেই উন্নতি করেছে।
নারায়ণ মূর্তির বক্তব্য অনুযায়ী সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা মানে ৬ দিনে গড়ে রোজ সাড়ে ১১ ঘণ্টা কাজ করা। তাতে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবযাপনের ভারসাম্য কীভাবে রাখা যাবে সেই প্রশ্ন উঠেছে।
কিন্তু সেই ভারসাম্যের তর্কে নারায়ণ মূর্তি ঢুকতে চাননি। তিনি বলেন, “কাজের ক্ষেত্রে আরও শৃঙ্খলা আনতে হবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। একা গরিব সরকার কী করবে? দেশের মানুষের যা সংস্কতি, সেটাই সরকারের সংস্কৃতি। তাই আমাদেরই কাজের সংস্কৃতিতে বদল ঘটাতে হবে।”
ভারতের উন্নতির পথে অন্যান্য অন্তরায়গুলি নিয়েও তার মতামত জানিয়েছেন নারায়ণ মূর্তি। তার মতে, সরকারি স্তরে দুর্নীতি, আমলাতন্ত্রের দক্ষতার অভাবও পিছিয়ে পড়ার কারণ। বিশ্ব মঞ্চে এগিয়ে থাকার জন্য এই সব বাধা কমাতেই হবে বলে তার মত।
নারায়ণ মূর্তির এই তত্ত্বে জোরালো সমর্থন করেছেন ওলা ইলেকট্রিকের সিইও ভাবিশ আগরওয়াল। তার কথায়, “আমি ওর সঙ্গে পূর্ণ সহমত পোষণ করি। এটা আমাদের কম কাজ করে বিনোদন-বিলাসের সময় নয়। বরং দেশের জন্য কাজ করার সময়। যা কয়েক প্রজন্ম ধরে অন্য দেশগুলি করেছে।"
