লা লিগা (লিগা ন্যাশনাল ডি ফুটবল প্রফেশনাল) হল বিশ্বের অন্যতম সেরা পেশাদার ফুটবল লিগ। লা লিগায় সবচেয়ে বেশি বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তার পরই বার্সেলোনা।
মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর স্পেন সফরের উদ্দেশে রওনা হবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক দপ্তর নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই স্পেন সফরের অ্যাজেন্ডায় বাণিজ্যের পাশাপাশি রয়েছে ফুটবল। তাই তার সফরে সঙ্গী হচ্ছেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত, ইমামি ইস্টবেঙ্গলের সভাপতি প্রণব দাশগুপ্ত ও মহামেডান সচিব ইশতিয়াক আহমেদ।
লা লিগা প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের টেবাস মেডরানো-র সঙ্গে এই তিন ক্লাব কর্তাকে নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে সামিল হবেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের জন্য ভারতীয় ফুটবল অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীকেও স্পেন সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সুনীল ছেত্রী তার অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
স্প্যানিশ ফুটবলের সঙ্গে এর আগেও কলকাতার যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা হয়েছে। সেই উদ্যোগের অন্যতম পুরোধা ছিলেন সৌরভ। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল অ্যাটলেটিকো কলকাতা। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অন্যতম টিম ছিল সেটি। পরে তা মোহনবাগানের সঙ্গে মিশে যায়। সম্ভবত সেই অভিজ্ঞতার কারণেই সৌরভকে এই সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মোহনবাগানের দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, "এটা একটা দারুণ উদ্যোগ, এরকম উদ্যোগ আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী নেননি। আমরা ওখানে গিয়ে ভারতের ফুটবল পরিকাঠামো কীরকম অবস্থায় রয়েছে, তা আরও কতটা উন্নত করলে আরও এগোতে পারব, সেটা আমরা বুঝতে পারব। সবচেয়ে বড় কথা, বার্সেলোনা এবং রিয়্যাল মাদ্রিদ এই দুটো ক্লাবে আমাদের নিয়ে যাওয়ার কথা আছে। এই দুটো ক্লাবের ইনফ্রাস্ট্রাকচার আমাদের ঘুরিয়ে দেখানো হবে। পাশাপাশি একটা সংযুক্তিকরণেরও ভাবনাচিন্তা চলছে। আমাদের মনে হয়, এর আগে কেউ যেটা করেননি, এই মুখ্যমন্ত্রী সেটা করে দেখাচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে রিয়্যাল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের একটা বৈঠক হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সেখানে আমাদের যা যা দরকার এবং যা প্রস্তাব আছে তা লিখে নিয়ে যেতে। আমাদের কী কী পরিকাঠামো রয়েছে এবং কী কী দরকার সেগুলো আমরা লিখে নিয়ে যাচ্ছি।"
মহামেডান ক্লাবের সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, "আমাদের ভারতে স্পোর্টিং মুখ্যমন্ত্রী কেউ যদি থাকেন তাহলে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমাদের ওখানে নিয়ে গিয়ে গ্রামীণ ফুটবল আরও কীভাবে উন্নতি করলে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে আমরা খেলতে পারব তা নিয়ে আমাদের একটা ওয়ার্কশপ হবে। বার্সেলোনা এবং রিয়্যাল মাদ্রিদ দুটি ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গেই আমাদের বৈঠক হবে। এখন নতুন বাগধারা হল, খেলোগে, কুঁদোগে, হোগে নবাব। খেলাধুলা থেকেও যে কোটি কোটি টাকা কামানো যায় সেটা আইএসএল আসার পর আমরা দেখেছি। কিন্তু এটা আমাদের কাছে একটা বড় এক্সপোজার, যেটাকে কাজে লাগাতে হবে আমাদের। আমরা আমাদের এজেন্ডা নিয়ে যাচ্ছি, সেখানে গিয়ে আমরা বলতে পারব আমাদের কী কী চাহিদা রয়েছে।"
আবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি তথা বিখ্যাত চিকিৎসক প্রণব দাশগুপ্তর দাবি, "আমাদের ফুটবল পরিকাঠামোর সঙ্গে যদি স্পেনের ফুটবল পরিকাঠামোর একটা টাই-আপ করা হয়, বা এখান থেকে আমাদের ফুটবল দল ওখানে খেলতে যায়, ওখানের অ্যাকাডেমিতে যদি আমাদের ফুটবলাররা খেলার সুযোগ পায়, সেটা একটা বড় বিষয় হবে। শুধু ফুটবলারদের নয়, আধিকারিকদেরও যে কত রকম কাজ থাকে একটা দলকে মার্কেটিং করার জন্য, সেটাও আমরা শিখব ওই বড় দুটো ক্লাবের কর্মকর্তাদের থেকে।"