কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়া পক্ষপাতহীনভাবে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখতে চায় আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)। পাশাপাশি নির্বাচের ব্যয় কমানোর বিষয়েও আলোচনা হয়।
ইএমএফের সদস্য এবং নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানাল এ সব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুযারি) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন ঝালা নাথ খানাল।
ইএমএফের সদস্য এবং নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানাল বলেন, “কীভাবে খুব পক্ষপাতহীন নির্বাচন করা যায় এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা যায়, এই দিক থেকে আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমরা এই বিষয়টিও আলোচনা করেছি, নির্বাচন খুব ব্যয়বহুল হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। কীভাবে এটি কমানো যায়, আমরা আমাদের মতামত আদান প্রদান করেছি”।
আগামী বছর বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আশাকরি, পক্ষপাতহীন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করবে। সকল নাগরিক তাদের ভোটাধিকার শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রয়োগ করবে। এছাড়া অনেক ভোটার প্রবাসে আছেন, যাদের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। কীভাবে তাদের সুযোগ দেওয়া যায়, এটিও একটি সমস্যা, যা (আমরা) আলোচনা করেছি”।
তিনি আরও বলেন, “তারা (নির্বাচন কমিশন) জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক আমন্ত্রণ করবে। এতে নির্বাচন অনেক অধিক থেকে অধিকতর পক্ষপাতহীন নির্বাচন হবে, আমরা এতে অনেক খুশি। আমরা আশা করব এই কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন খুব প্রায়োগিক, শান্তিপূর্ণ এবং পক্ষপাতহীন হবে”।
জার্মানির জিবিপি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভলকার ইউ ফ্রেডরিচ বলেন, “আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে সমস্যা, তা উত্তরণের উপায়, তাদের পরিকল্পনা ইত্যাদি শুনেছি। আমরা পারস্পারিক মতামত আদান-প্রদান করেছি। কোনোকিছুই পারফেক্ট নয়, এমনকি গণতন্ত্রও নয়”।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হবে। নির্বাচনের আগে আগামী কয়েক মাসে আমার আরও সহকর্মী আসবে পর্যবেক্ষণের জন্য। আমরা সবাই খুব আত্মবিশ্বাসী, বাংলাদেশের জনগণ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন পাবে। কারও কোনো রকম হস্তক্ষেপ ছাড়া তারা তাদের পছন্দের দলকে বেছে নিতে পারবেন”।
ভোটার এডুকেশন নিয়ে কার্যক্রম চালানোর পরামর্শের কথাও বলেন ফ্রেডরিচ। এ ক্ষেত্রে কেবল প্রাপ্তবয়স্ক নয়, কিন্ডারগার্টেন থেকেই এটি শুরু করার প্রতি পরামর্শ রয়েছে তাদের। কেননা, এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহণের ওপর নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করবে বলে মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্রেডরিচ বলেন, “এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, কোনো একটি দলকে অংশগ্রহণ করতেই হবে। নিবন্ধিত এবং যোগ্যতা থাকলে তাদের ভোটে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই”।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঝালানাথ খানাল, মালয়েশিয়া থেকে ইউনাইটেড ন্যাশন ওয়ার্ল্ড পিস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেরিয়েট্টা এরগুইডো রেফরমাডো, জার্মানি থেকে জিবিপি ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভলকার ইউ ফ্রেডরিচ, ভুটান থেকে গ্লোবাল ভিলেজ কানেকশনের চেয়ারম্যান জেকশন দুকপা, ভারত থেকে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি স্বপ্না সাহা।