বড়দিনের আগে দিয়ে বাফেলো ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ এলাকা অচল করে ফেলা তুষারঝড়ে নিহতের সংখ্যা নিউইয়র্কের পশ্চিমাঞ্চলে বেড়ে অন্তত ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে। ঐ অঞ্চল তার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ আবহাওয়া বিপর্যয় থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে।
নিজেদের গাড়ি, বাসা ও রাস্তার পাশের তুষার স্তূপে নিহতদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। দেশের বেশিরভাগ এলাক গ্রাস করে ফেলা ঝড়টিকে এখন দেশব্যাপী অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। সোমবারও উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে ব্যাপক এই ঝড়ে আরও মানুষ নিহত হয়েছে কারণ কিছু বাসিন্দা ঝড়ে নিজেদের বাসার ভেতরে আটকা পড়েন এবং ঝড়ের ফলে হাজার হাজার বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেন যে, শহরটির দমকল বাহিনীর প্রায় সব গাড়িই শনিবার আটকে পড়ে এবং তিনি মানুষজনকে ঐ অঞ্চলে গাড়ি চালনার উপর চলমান নিষেধাজ্ঞাটির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে অনুরোধ করেন। দ্য ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দফতর) বলে যে, বাফেলো নায়াগ্রা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত মোট তুষারপাতের পরিমাণ ছিল ৪৩ ইঞ্চি (১.১ মিটার)। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বিমানবন্দরটি মঙ্গলবার সকাল নাগাদ বন্ধ থাকবে।
জনশূন্য ও চলাচলের অযোগ্য পথগুলোতে আরও তুষারপাতের মধ্যে পূর্বাভাসকারীরা সতর্ক করেছেন যে কিছু কিছু এলাকায় সোমবার সকাল নাগাদ আরও অতিরিক্ত ১ থেকে ২ ফিট (৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার) তুষারপাত হতে পারে এবং বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ মাইল (৬৪ কিলোমিটার) পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ জানায় যে, ঝড়ের সময়ে লুটপাটের দুইটি “বিচ্ছিন্ন” ঘটনা ঘটেছে।
নিউইয়র্কের চিকটোওয়াগা’র উপশহর এলাকায় দুই ব্যক্তি নিজেদের বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাদের অসুস্থতার চিকিৎসা দিতে জরুরি কর্মীরা শুক্রবার সময়মত তাদের বাসায় পৌঁছতে ব্যর্থ হলে তাদের মৃত্যু হয়। ইরি কাউন্টি’র নির্বাহী মার্ক পোলোনকার্জ বলেন যে, অপর আরও ১০ জনের ঝড়ের সময়ে মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে বাফেলোতে ছয়জন রয়েছেন। তিনি সতর্ক করেন যে, আরও নিহত মানুষ থাকতে পারে।
ঝড়টি মেইন থেকে সিয়াটল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত করেছে। পাওয়ারআউটেজ.ইউএস এর তথ্যমতে সোমবার সকাল ৭টায় (পূর্ব উপকূলীয় ডেলাইট সময়) ১,০০,০০০ এরও কম গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন। এই সংখ্যাটি এর আগে সর্বোচ্চ ১৭ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছিল।
মধ্য আটলান্টিক অঞ্চলের গ্রিড পরিচালনাকারী সংস্থাটি শনিবার সকালের হিমবাহের সময়ে তাদের ৬ কোটি ৫০ লক্ষ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল।
দেশ জুড়েই ঝড়ের কারণে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মিসৌরি, ক্যানসাস ও কেন্টাকি-তে ছয়জন গাড়িচালক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এবং উইসকনসিন-এ এক নারী নদীর বরফ ভেঙে পানিতে পড়ে মারা যান।