অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভয়েস অব আমেরিকাকে রানা দাশগুপ্তঃ রাজনীতিকরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে


বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, "কুমিল্লার ঘটনার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। তার পরও সাম্প্রদায়িক হামলা অব্যাহত ছিল। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক ছিলেন কিন্তু সরকার ও রাজনৈতিক দলের ভূমিকায় প্রত্যাশিত অবস্থান দেখিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা উপেক্ষিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মনে করে রাজনীতিকরা তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ভোটের সময় তারা প্রতিশ্রুতি দেন, ভোট শেষ হলে ভুলে যান।" ভয়েস অব আমেরিকাকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে তা কিভাবে দেখেন?

রানা দাশগুপ্তঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। রাজনীতিকরা ক্ষমতায় টিকতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে বনিবনা করে চলেন। তাদের প্রেসক্রিপশনে বাধ্য হয়ে পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকতাকে রাখেন। এইভাবে হয় না। ১৯৭৫ সালের পর থেকে অপশক্তি সব সরকারের সময় দাপুটে অবস্থান নিয়ে আছে। রাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আমরা কিভাবে সব কিছু মোকাবিলা করতে পারি?

রানা দাশগুপ্তঃ এ সংকটের উত্তরণ ঘটাতে হলে ’৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে একসঙ্গে অগ্রসর হতে হবে।ফিরিয়ে আনতে হবে ’৭২-এর সংবিধান। অপরাধীদের দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অল্প সময়ে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনসহ যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে বন্ধ করতে হবে ব্লেম গেম। আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ সরকার কতটা সঠিক অবস্থানে আছে বলে মনে করেন?

রানা দাশগুপ্তঃ রানা দাশগুপ্ত বলেন, সরকার আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিলে সংকটের অবসান হবে না। যারা হামলা করেছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। প্রয়োজন স্থায়ী সমাধানের। দেশটা সবার। ২০০১ সালের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিষয়ে শাহাবুদ্দিন কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ ও সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারি দলে কোনো অপশক্তি লুকিয়ে থাকলে তাদের চিহ্নিত করতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আপনি বারবার সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করার কথা বলছেন। কিভাবে তা সম্ভব হতে পারে?

রানা দাশগুপ্তঃ সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা ও অপরাধীদের শাস্তির জন্য জাতীয় ঐকমত্য জরুরি। অশুভ শক্তি রুখতে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করে বসে থাকলে হয় না। তার সঙ্গে জনশক্তির সমাবেশ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, অতীতে যারা হামলা করেছিল তাদের বিচার হয়নি। আইনের ফাঁকফোকরে তারা বেরিয়ে এসেছে। সংখ্যালঘুদের মন্দির, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

XS
SM
MD
LG