অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো চীনের দিকে ঝুঁকছে


ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো চীনের দিকে ঝুঁকছে
ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো চীনের দিকে ঝুঁকছে

ভ্যাকসিন সংকট দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নতুন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অনেকটা বাধ্য হয়ে দেশগুলো বেশিদামে চীনের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা  ইতিমধ্যে চুক্তি সই করেছে। শ্রীলঙ্কা অতিসম্প্রতি ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে। 

দক্ষিণ এশিয়ায় দিন দিন চীনের প্রভাব বাড়ছে। ভ্যাকসিন সংকট চীনকে এই সুযোগ করে দিয়েছে।

প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতকে রেখে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। পেছনে পড়ে গেছে ভারত। যদিও ভ্যাকসিন আবিস্কারের শুরুতে ভারত ভীষণ সক্রিয় ছিল। দেশে দেশে উপহার হিসেবে ভ্যাকসিন পাঠিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকার সার্কভুক্ত দেশগুলোতে এক নতুন বার্তা দিয়েছিল। অবশ্য পাকিস্তান উপহারের তালিকায় ছিল না। কারণ পাকিস্তান চীনের ঐতিহাসিক এবং বিশ্বস্ত বন্ধু।

ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা ৪৭ সনের পর থেকেই। দু'দেশের মধ্যে তিনটি সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে। ভারতের ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি মাঝপথেই থেমে যায়। মার্চ মাসে তারা আচমকা ঘোষণা করে, ভ্যাকসিন রপ্তানি করা সম্ভব নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তখন করোনার দাপটে একদম কাবু। ব্যাপক জনপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে দেশগুলো চোখে রীতিমত অন্ধকার দেখছিল।

বাংলাদেশ সহ অনেক দেশই ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। বাংলাদেশ এমন নির্ভরশীলই হয়ে পড়েছিল চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রথমে রাজি হলেও পরে ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতায় সিদ্ধান্ত বদল করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা এক ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ভ্যাকসিনের জন্য যখন হাহাকার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তখন বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। আর এই সুযোগ নেয় চীন। তারা ভ্যাকসিন নিয়ে এগিয়ে আসে। শুরু করে সাঁড়াশি ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি।

বাংলাদেশকে ১১ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দেয়। একইভাবে অন্য দেশগুলোতেও ভ্যাকসিন পাঠায়। চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করেন। এসবই ছিল ভ্যাকসিন কূটনীতির অংশ। এরমধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে যাওয়ার পর সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায়।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও রাশিয়ার দিকে পা বাঁড়ায়। কিন্তু চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের ভিন্ন সংকট তৈরি হয়। ১৫ লাখ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া থেকে বঞ্চিত হন।

একই সংকটে পড়ে নেপাল। লাখ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষা করছেন।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। কবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভ্যাকসিন আসবে তা এখনও অনিশ্চিত। ভ্যাকসিন সংকট দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নতুন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অনেকটা বাধ্য হয়ে দেশগুলো বেশিদামে চীনের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যে চুক্তি সই করেছে। শ্রীলঙ্কা অতিসম্প্রতি ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে।

XS
SM
MD
LG