অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাহবুবউল আলম হানিফঃ 'বিএনপি এবং জামাতের মূল লক্ষ্য ছিল নির্বাচন বানচাল করা’


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচন থেকে দূরে থেকে বিরোধীদল বিএনপি তার অবস্থান নষ্ট করে ফেলেছে। ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'বিএনপি নির্বাচন করতে চায় নি, তাদের লক্ষ্য ছিল সরকারের পতন ঘটিয়ে একটা অসংবিধানিক সরকার গঠন করা।'

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, দেশে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেখানে ভোটারদের অংশগ্রহণটাই মুখ্য বিষয় হবে। তাঁর মতে, কোন দল আসলো আর কে আসলো না, তা দিয়ে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হল কি না, তা যাচাই করা ঠিক হবে না।

ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচন থেকে দূরে থেকে বিরোধীদল বিএনপি তার অবস্থান নষ্ট করে ফেলেছে। হানিফ বলেন, বিএনপি যেহেতু তাদের অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই তাদের প্রধান বিরোধী দল বলার সুযোগ আর নেই।

আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করেন, বিএনপি, জামাত এবং অন্যান্য কিছু দল নির্বাচন করতে চায় নি। বরং, তাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন বানচাল করা, ‘’এবং এই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটা অসংবিধানিক সরকার গঠন করা,’’ ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলাকে তিনি বলেন।

সম্প্রতি ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি’র সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভি বলেছিলেন, তাদের আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে এবং সরকার ৭ জানুয়ারী ‘এক তরফা’ নির্বাচন করতে পারবে না। রিজভির কথা উড়িয়ে দিয়ে হানিফ বলেন, বিএনপি’র বর্তমান আন্দোলনকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা যায় না। তিনি বিএনপি’র আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘’যারা এধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে বলে, তাদের মধ্যে তো রাজনীতি নেই। তারা তো ইতিমধ্যে সন্ত্রাসের মধ্যে চলে গেছে।‘’

হানিফ হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘’সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নির্বাচন বন্ধ করা যাবে না, সরকারেরও কোন ক্ষতি করা যাবে না। বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সন্ত্রাসকে কঠোরভাবে দমন করবে।‘’

মাহবুবুল আলম হানিফ নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করে বলেন, তারা এমন কিছু করেননি যা নিয়ে কোন বিতর্ক হয়েছে। তিনি মনে করেন, কমিশন ‘’যথেষ্ট আন্তরিকভাবেই একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের যা যা করণীয় বা তাদের দায়িত্বের মধ্যে, সবগুলোই তারা পালন করেছেন।‘’

হানিফ অভিযোগ করেন, সরকার-বিরোধীরা ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ের জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারকে ভয় দেখানোর জন্য বা নিজেদের কর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশনের কথা বলা হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমাদেশগুলো কখনোই এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন বলে তাঁর কাছে মনে হয় না।

গত দুটি সাধারণ নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও হানিফ ২০১৪ বা ২০১৮ সালের নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত’ বলে মানতে রাজি হন নি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হবার ঘটনা অসাংবিধানিক কিছু ছিল না। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, অনিয়মের কোন প্রমাণ কেউ দেখাতে পারে নি – যদিও নির্বাচনের দিন সকালেই বিবিসি বাংলার ফেইসবুক পাতায় চট্টগ্রামের এক ভোট কেন্দ্রে কারচুপির প্রমাণ প্রকাশ করা হয়েছিল। হানিফ প্রশ্ন করেন, কারচুপির প্রমাণ যদি থাকত, তাহলে স্থানীয় গণমাধ্যম কেন সেটা তাদের খবরে নিয়ে আসে নি।

ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাবির মুস্তাফা।

XS
SM
MD
LG