আরএফএর পরিসংখ্যান দেখা গেছে যে মিয়ানমার জান্তা সেনারা পশ্চিমাঞ্চলীয় ছিন রাজ্যে কয়েক মাস ধরে ৬০টিরও বেশি বেসামরিক বাড়িঘর এবং একটি গির্জা ধ্বংস করেছে। পহেলা ফেব্রুয়ারী অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলির মধ্যে লড়াই চলছে।
সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে সামরিক বাহিনী ছিনের থান্টলাং শহরে তাণ্ডব চালিয়ে ১৯টি বাড়ি ধ্বংস করে। জান্তা সৈন্যরা ১৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে ৪২টি বাড়ি এবং নিকটস্থ ফালাম শহরে একটি গির্জা, তালাং রন এবং তাল গ্রামের কিছু এলাকায় এবং পুরো রিয়াল্টি গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,সামরিক বাহিনী শুধু বাড়িঘরই জ্বালিয়ে দেয়নি, লুটপাটও করেছে এবং খামারের পশুদের হত্যা করেছে। আক্রমণ থেকে বাঁচতে সাত গ্রামের প্রায় ৯০০ বাসিন্দা গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
তাল গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা এক বাসিন্দা আরএফএর মিয়ানমার বিভাগকে জানান, “একটি বাড়ি তৈরি করতে ১ কোটি কিয়াটেরও [$৫,৫৭২] বেশি খরচ হয়। আমরা আমাদের ছিন ঐতিহ্য অনুসারে একটি বাড়ি তৈরিতে আমাদের সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করি। যুদ্ধের কারণে পালিয়ে আসার জন্য আমাদের কাছে টাকা নেই তাই বাড়ি নতুন করে তৈরি করা খুব কঠিন হবে। আমাদের কাছে খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত খাবারও নেই।”
তাল গ্রামের ঐ বাসিন্দা বলেন, “আগুনের কারণে গ্রামে এখন আমাদের কোনো বাড়ি নেই। আমাদের কি বনের এই কুঁড়েঘরে থাকতে হবে? আমি আর কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।সবাই কাঁদছে।"
সামরিক বাহিনী যদিও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে অস্বীকার করেছে, কিন্তু সূত্রগুলো আরএফএকে বলেছে যে জান্তা সৈন্যরাই একমাত্র সম্ভাব্য অপরাধী।
তালাং রং গ্রামের একজন বাসিন্দা, যিনি নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে আরএফএ-র মিয়ানমার বিভাগকে জানান, “আমাদের গ্রামে একমাত্র তারাই ছিল কারণ অন্য সবাই এর মধ্যে পালিয়ে গিয়েছিল। ওরা বাড়ি পুড়িয়ে না দিলে কারা দিল?”
তালাং রং এর বাসিন্দা বলেন, “এটা ক্ষমার অযোগ্য যে তারা গ্রামে আগুন দিয়েছে। আমাদের বাড়িতে থেকে আমাদের খাবার খেয়েছে। তারা যা খুশি তাই করেছে। ওরা আমাদের পশুদের মেরে ফেলেছে। এরকম অনেক কিছু করেছে তারা।”
৯ অক্টোবর ঐ অঞ্চলে সামরিক শক্তিবৃদ্ধির পর অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলি ঘটেছে।ছিন রাজ্যের কিছু অংশের সঙ্গে সাগাইংয়ের দক্ষিণ অংশের সঙ্গে যুক্তকারী মহাসড়ক কালেমও-ফালাম-হাখার পাশে প্রতিটি গ্রামে সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে।
চিন এবং সাগাইং উভয়ই নয় মাস আগেও মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা সেনাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মিলিশিয়াদের সশস্ত্র প্রতিরোধের কেন্দ্রস্থল ছিল।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন টুনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আরএফএ। কিন্তু কেউ টেলিফোন ধরেনি। ১৪ অক্টোবর তিনি আরএফএকে অস্বীকার করেন যে সামরিক বাহিনী রিয়াল্টি গ্রামে ১২টি বাড়ি এবং গির্জা পুড়িয়ে দিয়েছে।