বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা

Rohingya camp heading worst environmental disaster

ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেবাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলো। পানি দূষণ, ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধনসহ বিভিন্ন কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া না হলে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি ভোগ করতে হবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিলের প্রতিবেদন।

Your browser doesn’t support HTML5

মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিলের প্রতিবেদন

বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প এলাকাগুলো ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্প এলাকার অধিকাংশ পানি দূষিত হয়ে গেছে। নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভের পানির স্তর ।

Rohingya camp heading worst environmental disaster

পাহাড় কাটায় বদলে গেছে ভূমির প্রকৃতি। আর জ্বালানী কাঠ সংগ্রহে যেভাবে প্রতিদিনই বৃক্ষ নিধন হচ্ছে; হারিয়ে যেতে বসেছে সবুজ প্রকৃতি। বনবিভাগের হিসাবমতে, ইতোমধ্যে কেবল বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ৪শত কোটি টাকার। কিন্তু পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে; তা অকল্পনীয়।
এভাবে চলতে থাকলে এক সময় মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠতে পারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ আশেপাশে এলাকা।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার একর বনভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের বসবাস ও যাবতীয় কর্মকা-ের প্রভাব পড়েছে আশেপাশের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে। কেবল জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ অব্যাহত থাকলে চলতি বছরের মধ্যে ২৫ হাজার একর বনভূমির বৃক্ষ বিলীন হলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই ত্রাণের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জ্বালানী সরবরাহের পরামর্শ দিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উপ-বন সংরক্ষক মোঃ আলী কবীর।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এই ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ছুটে চলা- আচঁ করতে পেরেছেন সেবাকর্মীরাও। তাই সবুজায়নে কাজ শুরু করেছে ক্যাম্পগুলোতে। ঘাস ও বৃক্ষ রোপনসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা সংকটে গঠিত জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন ইন্টারসেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপের মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এই পরিবেশ বিপর্যয়ের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ভোগ করতে হবে স্থানীয়দের। পরিবেশ ও জীবিবৈচিত্রের যে ক্ষতি হয়েছে, যদিও তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়; তা পুনরুদ্ধারে বিশেষ তহবিল গড়ার পরামর্শ দিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটি ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্লাটফর্ম কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোমের কো-চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র পুনঃরুদ্ধারে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া। বৃক্ষ নিধন রোধে রোহিঙ্গাদের মাঝে জ্বালানী বিতরণসহ পরিবেশের দিকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।