বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভ্যাকসিন মেলে না। তাই ৭৭ বছর বয়সে এসে পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা, যিনি ওরফে সন্তু লারমা নামে বেশি খ্যাত।
পাহাড়িদের এই নেতা বিভিন্ন কাজে গিয়ে ভোটার আইডি না থাকায় নানা সমস্যায় ছিলেন। এমনকি বিপত্তি ছিল বিদেশ ভ্রমণেও। তারপরও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর এতদিন ভোটার আইডি নেননি। কিন্তু এবার আর পারছিলেন না কোভিড মোকাবিলা করতে টিকা নিতে গিয়ে। বাংলাদেশে টিকা নিতে অনলাইনে তালিকাভুক্ত হতে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের প্রয়োজন হয়। তাই ২৯ আগস্ট রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিসে অতি গোপনে যান সন্তু লারমা। সব ধরনের গোপনীয়তা বজায় রেখে আইডি নিতে সব কাজ সম্পন্ন করেন। এরমধ্যে তিনি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র এখনো হাতে পাননি।
জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ১৯৯৭ সালে অস্ত্র সমর্পণ করে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে তার দলবল নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। তিনি পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা নিলেও কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি, জাতীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন না। তিনি পার্বত্য জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে এখনো কথা বলেন। এবার ভোটার আইডি কার্ডের জন্য তার আবেদন সবার দৃষ্টি কেড়েছে।
রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, "চলতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসে সন্তু লারমা আমাকে ফোন করে ভোটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন নির্বাচন থাকায় তাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হযনি। একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করলে আমরা তাকে ভোটার তালিকাভুক্ত করব এটাই স্বাভাবিক।"