ঢাকার মীরপুর থেকে নিখোঁজ ৮টি মেয়ের ৫জনকে উদ্ধার

নিখোঁজ তিন ছাত্রী

রাজধানী ঢাকার মীরপুর থেকে নিখোঁজ ৮ জনের মধ্যে ৫ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। টানা দুই দিনের অভিযানের পর পুলিশ ২টি মেয়ে শিশুকে ঢাকার সদরঘাট ও অন্য তিনজনকে নেত্রকোনা ও গাজিপুর থেকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে ৫জনকে। পুলিশ জানিয়েছে, পল্লবীর নিখোঁজ তিন কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার বাসা থেকে বের হয়ে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজ হন। পুলিশের ধারণা, টিকটক চক্রের কবলে পড়ে নিখোঁজ তরুণীরা পাচারের শিকার হয়েছেন।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে মীরপুর থেকে ৮জন নিখোঁজ হয়। মীরপুরে গত ৬ মাসে পাচারের অনেকগুলো ঘটনায় তোলপাড় চলছে। একই সঙ্গে আতংক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে নিন্মবিত্ত পরিবারগুলি এখন উদ্বিগ্ন।

পুলিশ জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর মিরপুরের আনসার ক্যাম্প এলাকার দুই শিশু পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে বাসা থেকে বের হয়ে পথে একটি চক্রের ফাঁদে পড়ে। তাদের সদরঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে তাদের মিরপুর এভিনিউ-৫-এর একটি কারখানায় আটকে রেখেছিল সাব্বির, আল আমিন ও আরমান নামে তিন যুবক। তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে ।

ডিবির (মিরপুর) উপকমিশনার মানস কুমার পোদ্দার বলেন, মিরপুর থেকে নিখোঁজ দুই মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েদের পরিবারের পক্ষ থেকে মিরপুর থানায় মামলা করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত মেয়েদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

"কেন ঘর ছেড়েছিল?" এ প্রশ্নের জবাবে ডিসি মানস কুমার জানান, প্রাথমিকভাবে শিশুরা জানিয়েছে বাবা-মায়ের বকুনির কারণে তারা অভিমান করে একসঙ্গে বাসা থেকে বের হয়। এরপর তারা পথে কোনো একটি খারাপ চক্রের খপ্পরে পড়ে। পরে কৌশলে চক্রের হাত থেকে রক্ষা পায়। এরপর তারা নিজেরাই সদরঘাটে যায় বরিশালের উদ্দেশে। এদের মধ্যে এক শিশুর নানাবাড়ি বরিশালে। লঞ্চে করে সেখানেই যাওয়ার চিন্তাভাবনা ছিল তাদের।

৩ অক্টোবর মিরপুরের জনতা হাউজিং এলাকা থেকে নিখোঁজ দুই মেয়ে নেত্রকোনা থেকে উদ্ধার হয়। তারা তাদের ঘনিষ্ঠ দুই তরুণের সঙ্গে দেখা করতে মিরপুর থেকে নেত্রকোনায় গিয়েছিল। তাদের উদ্ধারের সময় রাব্বি ও সাগর নামে দুই তরুণকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মিরপুর মডেল থানার ওসি। মণিপুর স্কুলের উদ্ধার হওয়া ছাত্রীর বিষয়ে রূপনগর থানার উপপরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বাবা-মায়ের বকুনি খেয়ে ওই ছাত্রী বাড়ি ছেড়ে গাজীপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে আত্মগোপন করে।

অন্যদিকে, গত ছয় দিনেও পল্লবী থেকে নিখোঁজ তিন কলেজছাত্রীকে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার বাসা থেকে বের হয়ে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজ হন। তারা নগদ টাকা, সোনার অলঙ্কার ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। গতকাল পর্যন্ত তাদের খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ ও নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের স্বজনদের সন্দেহ, তারা কোনো মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েছেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রকিবুল্লাহ নামে একজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিন কলেজছাত্রীর বিষয়ে র‌্যাব-৪-এর পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তাদের খোঁজ পেতে কাজ চলছে। আশা করি শিগগিরই সন্ধান মিলবে।’