খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনি কলেজের একজন প্রভাষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কলেজের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী অধ্যক্ষ ও সভাপতিসহ বিভিন্ন জনের কাছে সৌমিত্র সাধু নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত সৌমিত্র সাধু উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের সুনীল সাধুর ছেলে এবং কপিলমুনি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক।
এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ডাকযোগে অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পর সৌমিত্র সাধুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাঠানো হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি পাঠানো ওই নোটিশে তাকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।
অভিযোগে জানানো হয়, সৌমিত্র সাধু শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় মটরসাইকেল স্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, সে তার কাছে গত প্রায় চার বছর ধরে কোচিং করছে। মাস ছয় আগে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। সে কপিলমুনি কলেজে পড়ালেখা ও কোচিংয়ের সুবিধার্থে পার্শ্ববর্তী তার এক মাসীর বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করে। সম্প্রতি একদিন কোচিংয়ে সকলের অনুপস্থিতে ওই শিক্ষক তার শ্লীলতাহানী ঘটায়। এ ঘটনায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এমনকি তার এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় ঝামেলা এড়াতে কিছুদিন সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ঘটনার পর প্রথমে সে বিষয়টি কলেজের উপাধ্যক্ষ ত্রিদিব কান্তি মণ্ডলকে জানায়। এরপর তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকসহ কলেজের আরও এক শিক্ষক পরিমল সাধুকে সঙ্গে নিয়ে তার মাসীর বাড়িতে যান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য। এই ঘটনায় সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাসহ ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না, এমনকি উপাধ্যক্ষ এ ঘটনায় তার যথোপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে অভিযুক্তকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। তবে এখন পর্যন্ত উপাধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি, এমনকি তিনি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করেন।
এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রী সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
এ ব্যাপারে কলেজের উপাধ্যক্ষ ত্রিদিব কান্তি মণ্ডল জানান, খবর পেয়ে তিনি বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে নতুন করে এ নিয়ে অভিযোগপত্র উত্থাপিত হওয়ার বিষয়টি জানা নেই তার।
কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুল্ল্যাহ বাহার অভিযোগপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে জানান, তার কাছে ডাকযোগে একটি অভিযোগপত্র এসেছে। এরপর গত ১৫ জানুয়ারি অভিযুক্ত সৌমিত্র সাধুকে তার স্বপক্ষে কারণ দর্শাতে সাত দিনের সময় দিয়ে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। এর জবাব পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কপিলমুনি কলেজের সভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, তাকেও এরকম একটি অভিযোপত্র পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কলেজ অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করেছেন।