করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রায় সাড়ে ছাব্বিশ কোটি লোক খাদ্যাভাবের মুখোমুখি হতে পারে

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে ছাব্বিশ কোটি লোক মারাত্মক খাদ্যাভাবের মুখোমুখি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। গত বছর বলা হয়েছিল যে বিশ্বে ১৩ কোটি লোক খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবে আজকের হিসেব তার দ্বিগুণ। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হাঙ্গার প্রজেক্ট বা ক্ষুধা প্রকল্পের উদ্যোগে পালিত বিশ্ব ক্ষুধা দিবসের প্রাক্কালে এই বিশ্লেষণটি পাওয়া গেছে। এখন যে প্রতি ৯ জনের মধ্যে ১ জনের পর্যাপ্ত খাবার নেই, তার মানে ৮২ কোটি লোক ক্ষুধার মধ্যে টিকে আছে, এই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। প্রকল্পের মুখপাত্রী সারা উইলসন বলেন “আমরা জানি এটা স্বাস্থ্য সংকটকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এটা হচ্ছে ক্ষুধার সংকট যা ব্যক্তি জীবনকে মারাত্মক ভাবে পর্যদূস্ত করছে”। আশংকা করা হচ্ছে অর্থনৈতিক অভাব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং খাদ্য সরবরাহে বড় রকমের বাধা কভিড ১৯ এর সঙ্গে যুক্ত এই অনাহারের মহামারির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর নির্বাহী পরিচালক জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, এখনও কোন দূর্ভিক্ষ হয়নি তবে তিনি বলেন আমরা অল্প কয়েক মাসের মধ্যে ঐতিহাসিক পরিমাপের একাধিক দূর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে পারি।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী বলছে যে খাদ্য নিরাপত্তার উপর কভিড ১৯ এর প্রভাব সব চেয়ে বেশি পড়বে সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোর উপর যেখানে এই রোগের ক্ষতিকর প্রভাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে সেখানকার সংঘাত। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তারা বলছেন সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে আমরা অনুমান করছি প্রায় ৩৬টি দেশে দূর্ভিক্ষ হতে পারে এবং এর মধ্যে দশটি এমন দেশ রয়েছে যেখানে প্রায় দশ লক্ষ লোক অনাহারের কাছাকাছি রয়েছে। পাকিস্তানে অ্যাকশান আগেনস্ট হাঙ্গারের কান্ট্রি ডিরেক্টার জেনিফার অ্যাঙ্ক্রম বলছেন তাপদাহ, পঙ্গপাল এবং বন্যার কারণে সেখানে তীব্র খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। পাকিস্তানের মতো কিছু আফ্রিকান রাষ্ট্রও এই সমস্যার সম্মুখীন।