চার্টার ফ্লাইটগুলোকে আফগানিস্তান ত্যাগের অনুমতি দেওয়ার জন্য তালিবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ফাইল ফটো-উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরীফ বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের কাছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক বিমান দেখা যাচ্ছে। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন তালিবানকে আফগানিস্তান ত্যাগের জন্য চার্টার ফ্লাইটগুলোকে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান।আমেরিকান নাগরিক ও ঝুঁকিতে থাকা আফগান নাগরিকদের বহনকারী বিমানগুলি মাজার-ই-শরীফ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়ে আছে বলে জানা গেছে।

জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস-এর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, "এখন পর্যন্ত তালিবান চার্টার ফ্লাইট ছাড়ার অনুমতি দিচ্ছে না। তারা দাবি করছে যে কিছু যাত্রীর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই।"

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস জার্মানির রামস্টেইন এয়ার বেসে বৈঠকের পর একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।৮ সেপ্টেম্বর ২০২১।


যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেন,"মূল কথা হল: ঐ চার্টার ফ্লাইটগুলিকে আফগানিস্তান ত্যাগ করার অনুমতি দেয়া প্রয়োজন। আর তারা যাতে সেটা করতে পারে সে জন্য আমরা প্রত্যেকদিন কাজ করে যাবো।"

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং ঝুঁকিতে থাকা আফগান নাগরিকরা উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরীফ বিমানবন্দরে আটকা পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বহির্গামী ফ্লাইটের কিছু আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে এই বিষয়ে যথেষ্ট কাজ না করার অভিযোগ করেছেন।

ডেমোক্র্যাট সেনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থাল এক টুইট বার্তায় বলেন, "আমাদের সরকারের বিলম্ব ও নিষ্ক্রিয়তায় আমি গভীরভাবে হতাশ, এমনকি ক্ষুব্ধ। অমার্জনীয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আটকে থাকা আমাদের আফগান মিত্রদের এই বিষয়টি নিয়ে জবাবদিহির জন্য প্রচুর সময় পাওয়া যাবে পরে।"

হোয়াইট হাউজে, যখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে তালিবানকে এ সম্পর্কে আরও কিছু করার জন্য চাপ দিতে পারে, তখন কর্মকর্তারা সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেন।বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি বলেন,"ফ্লাইট আটকে রাখার ব্যাপারে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমরা সেখানে উপস্থিত নেই।"

তবে তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজে মুষ্টিমেয় আমেরিকানরা এবং আরও কয়েকশো লোক থাকতে পারে যাদের সনাক্ত করা হয়নি বা যাচাই করা হয়নি এবং তারা কোথায় অবতরণ করবে তা একটি "মৌলিক প্রশ্ন"।

সাকি জিজ্ঞাসা করেন, "আমরা কি শত শত লোক বহনকারী বিমানগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিতে অবতরনের অনুমতি দিতে পারি? আমরা জানিনা না বিমানের ঐ লোকগুলো কারা, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণের জন্য কি ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে আমরা তা জানিনা।"

আফগানিস্তান ত্যাগ করতে ইচ্ছুক লোকেদের নিরাপদে সরে যাওয়া ও ভ্রমনের স্বাধীনতার যে প্রতিশ্রুতি তালিবান দিয়েছিল তা নিশ্চিত করতে তালিবানের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।

পররাষ্ট্র দফতর জানায়, সীমান্ত পেরুনোর সুবিধার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কতিপয় ব্যক্তি ও তালিবানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে।

বুধবার ব্লিংকেন এবং মাস আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য অংশীদারদের একটি দল ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।তালিবান আফগানিস্তান দখলের পর সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবাহ অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টার বিষয়েও আলোচনা হয়।

শীত আসার আগেই প্রায় ১ কোটি ৮ লক্ষ আফগান জনগণের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য জরুরী সহায়তা প্রয়োজন।জাতিসংঘ ডিসেম্বরের মধ্যে মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য মোট ৬০ কোটি ৬ লক্ষ ডলার চেয়েছে।