যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার নজরদারী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ওবামা প্রশাসন

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা কর্তৃক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের টেলিফোন নজরদারীর অভিযোগ, ওবামা প্রশাসন’কে খানিকটা চিন্তায় ফেলেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় এখন তারা। এ নিয়ে ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন:

যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু রাষ্ট্রসমুহের নেতৃবর্গের ওপর নজরদারী বন্ধে ওবামা প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা’কে নির্দেশ দেয়ার কথা বিবেচনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি দেশে বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওবামা প্রশাসন।

বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু রাষ্ট্র জার্মানীর চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেলসহ বিশ্বের ৩৫টি দেশের নেতৃবৃন্দের ব্যাক্তিগত টেলিফোন নজরদারী করেছে জাতিয় নিরাপত্তা সংস্থা। সোমবার কেবল নেটওয়ার্ক ফিউশন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে, ফ্রান্স, ইটালী, ষ্পেন ও অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দের ফোন, ইমেইল, ইন্টারনেটের ওপর জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার নজরদারীর বিষয়টি জানতেন কিনা সে বিষয়ও পরিস্কার করেননি মিষ্টার ওবামা।

মিষ্টার ওবামা বলেন, “আমি যা নিশ্চিত করছি তা হচ্ছে গোয়ন্দারা কিভাবে দেশের বাইরে কাজ করেন আমরা তার একটি পূর্নাঙ্গ পর্যবেক্ষন করছি। দেশের অভ্যন্তরে আমরা কি করি না করি তার কিছু কঠিন আইন কানুন রয়েছে। এবং স্নোডেন যে সব তথ্য ফাঁস করেছে তার মধ্যে তার কিছুও ছিল। অন্তর্জাতিকভাবে আমাদের গোয়েন্দাদের কাজের সীমাবদ্ধতা কিছুটা কম। তবে স্নোডেন কাহিনীর আগেই আমি বলেছি যে, আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ গোয়েন্দাদের তথ্য সংগ্রহ ও কাজের ক্ষেত্র সহজ করেছে এবং ফলে আমরা নিজেরাও সঠিক জীবন যাপনে অভ্যস্থ্য হয়েছি যা আমাদের মূল্যবোধে প্রতিফলিত”।

জাতিয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক চুক্তি ভিত্তিক কর্মকর্তা এ্যাডওয়ার্ড স্নোডেন এ বছরের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও বিদেশী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ইন্টারনেট ব্যবহার ও টেলিফোন কথোপকথনের ওপর নজরদারী সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করে।

ইউরোপীয়ন ইউনিয়নের আইন প্রনেতাদের বড় একটি প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রনেতাদের সঙ্গে এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ অভিযোগ নিয়ে বহুবার বৈঠক করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয়ন ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের কো-চেয়ার ক্লাউডে মোরাইস বলেন:

“আমি মনে করি বিসয়টি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয়ন ইউনিয়নের সম্পর্কে একটা টোকা মেরেছে। উদারনস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু জার্মানীর সঙ্গে এই কারনে বিশ্বাসের সম্পর্ক একটু হলেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এটি খুব মারাত্মক নয় ঠিক, কারন আমরা যার বিরুদ্ধে কথা বলছি সে হচ্ছে আমাদের সম্মিলিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র মত কমৃসূচীর সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার। এটি শুধুমাত্র বিশ্বাসের ক্ষেত্রটিকে একটি টোকা মারবে। ইউরোপয়িন ইউনিয়নের এই বিশ্বাস জোড়া লাগোনোর পূর্ন প্রচেষ্টা রয়েছে আর জানার আগ্রহ রয়েছে কেনো যুক্তরাষ্ট্রের গোয়ন্দাদেরকে তা করতে হয়েছিল?”

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল The Wall Street Journal রিপোর্ট করেছে যে প্রেসিডেন্ট ওবামা’র না জানা অবস্থায় তাঁর নিজের গোয়েন্দারা জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল সহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের’কে নজরদারী করে আসছিলো।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট গোয়েন্দা কমিটির প্রধান সেনেটর ডায়ান ফাইনষ্টেইন সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন এই ঘটনার একটি পূর্নাঙ্গ পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে এ নিয়ে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন।

Your browser doesn’t support HTML5

যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু রাষ্ট্রসমুহের নেতৃবর্গের ওপর নজরদারী বন্ধে ওবামা প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা