ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা ২০১৫ সাল পর্যন্ত গড়ালো

ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে যুক্তরাস্ট্রের পররাস্ট্রমন্ত্রী জন কেরীর প্রয়াসে, ইরাণ ও ছয় বিশ্ব শক্তি নভেম্বরের সময়সীমার মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যার্থ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ২০১৫ সাল পর্যন্ত গড়ালো। তবে যুক্তরাস্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নতুন বছরেও এ সংকট নিরসণে ঝামেলা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভয়েস অব আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা পাম ডকিনস বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর রিপোর্টে; শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।

Your browser doesn’t support HTML5

ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা ২০১৫ সাল পর্যন্ত গড়ালো

“ভালো একটি বৈঠকের আশায় রইলাম”

গত বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরানের পররাস্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে প্রথমবার আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় এমন জোরের সঙ্গেই আশাবাদ ব্যাক্ত করেছিলেন যুক্তরাস্ট্রের পররাস্ট্রমন্ত্রী জন কেরী। ইরানের পারমানবিক কর্মসূচীর নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তাঁরা।

“এখন দেখতে হবে বিষয়টি সামনের দিকে এগুনোর জন্যে আমরা আমাদের ইতিবাচক আলোচনাগুলো কাজে লাগাতে পারি কি না”।

তারপর থেকে দুই নেতা বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি ইরান ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানীর আলোচকবৃন্দ ইরানের পারমানবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচী সীমিত করার লক্ষ্যে বৈঠক করেছেন।

তাদের পারমানবিক কর্মসূচীর উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ন; ইরান একথা বারবার বললেন, কিছু পশ্চিমা শক্তির আশংকা, ইরাণ পারমানবিক অস্ত্র বানায় কিনা, তাই নিয়ে। একটি চুক্তি যদি হয় তবে তা ইরানকে শক্ত নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে মুক্তি দেবে।

তবে জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠকে আলোকবৃন্দ ২৪শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলোচনার সময়সীমা বৃদ্ধি করেন। আর গতমাসে তা আবারো বাড়ানো হয়।

“সময় বাড়ানো হয়েছে বলে আলোচনা সহজ হবে, তা মনে হয় না। আগেও যে যার অবস্থানে কঠোর ছিলেন, সামনেও তাই হবে”।

সমঝোতায় বা কি সে সম্পর্কে ইঙ্গিত করেন জারিফ, “বড়ো বাঁধা ছিল একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস”।

আলোচকবৃন্দ আশা করছেন জুলাই নাগাদ একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হবেন তারা। তবে যুক্তরাস্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কংগ্রেসে পরিবর্তনের কারণে তাদের সেই প্রচেষ্টায় নানা জটিলতা আসতে পারে। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত নতুন সেনেট হয়ত ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেয়ার জন্য রাজী হবে না; এমন আশংকার কথা বললেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের বিশ্লেষক রবার্ট এইনহর্ন।

“ওবামা প্রশাসন বিশ্বাস করে, জানুয়ারীতে নতুন কংগ্রেসের কর্মকান্ড শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যপারে ভোট চাওয়া সহজ হবে না”।

তিরি আরো বলেন ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে সমঝোতা আলোচনা যদি আরো বেশী দীর্ঘয়িত হয়, ত তা যুক্তরাস্ট্রের আইন প্রণেতাদেরকে আরো হতাশ করতে পারে।

“বিধায়করা ইরানের বিরুদ্ধে আরো শক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। তার প্রভাবও সমঝোতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে”।

কেরী বলেন আলোকবৃন্দের মধ্যে যেহেতু এখনো অনেক বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে, তারা বিশ্বাস করেন বর্ধিত কলেবরে আলোচনায় ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে উদ্বেগ ও সংকট নিরসণে সমন্বিত চুক্তি অবশ্যই সম্ভব।