মিয়ানমারে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ

কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্সের দেয়া ছবিতে কায়াহ রাজ্যের হরুসো শহরে গাড়ীতে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। (ফাইল ছবি- এপি)

বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, গত সপ্তাহে মিয়ানমারে ৩০ জনেরও বেশি লোকের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে, যার জন্যে জান্তা সৈন্যদেরকে দায়ী করা হয়েছে। বড়দিনের আগে্র দিন পূর্ব কায়াহ রাজ্যে ঘটে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহীরা সেখানে সেনা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে, যারা গত ফেব্রুয়ারী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখল করে। বুধবার সন্ধ্যায় নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যরা এক বিবৃতিতে “এর জন্যে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন”। অবিলম্বে সকল সংঘাত সমাপ্তির আহ্বান জানান তারা এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় চার শিশু এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের দুইজন কর্মীসহ “অন্তত ৩৫ জন লোক” মারা গেছেন। নিরাপত্তা পরিষদ "সংকটে থাকা মানুষদের সহায়তার লক্ষ্যে নিরাপদ ও বাধাহীন মানবিক কার্যক্রম চালু এবং মানবিক সহায়তা ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত লোকজনদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্ব" দিয়েছে। জান্তা বিরোধী যোদ্ধারা জানান হামলার পর তারা কায়াহ রাজ্যের হাইওয়েতে নারী ও শিশুসহ ৩০টিরও বেশি পোড়া লাশ দেখেছেন। সেভ দ্য চিলড্রেনের দুইজন কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন এবং মঙ্গলবার ঐ অধিকার গোষ্ঠী নিশ্চিত করেছেন যে মৃতদের মধ্যে তারাও রয়েছেন। ফেব্রুয়ারীতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত লেগে রয়েছে। স্থানীয় এক পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠীর মতে, নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে ১৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হামলার পরপরই ওয়াশিংটন আবার মিয়ানমার জান্তার ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহবান জানিয়েছে। রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর রক্তাক্ত অভিযানের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো,অনেক আগেই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য সীমিত করেছে। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান-পূর্ববর্তী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সময়েও তা বহাল ছিল। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মিয়ানমারে অস্ত্র চালান বন্ধের বিষয়ে জুন মাসে সাধারণ পরিষদে ভোট হয়। তবে অধিক ক্ষমতাশীল নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক তা না করায় সেই ব্যবস্থা ছিল প্রতীকী। চীন এবং রাশিয়া, যাদের নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা রয়েছে, তারা এবং মিয়ানমারের প্রতিবেশি ভারত হচ্ছে মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহের প্রধান উৎস।