সুন্দরবনকে বাঁচাতে আট হাজার ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করল বিজ্ঞান মঞ্চ

সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপণ করছেন পরিবেশ কর্মীরা- ফটো- দ্য ওয়াল

ম্যানগ্রোভদের বিশাল বাহিনী গড়তে না পারলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব বারে বারেই সঙ্কটে পড়বে। বিগত কয়েক বছরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের দাপট সেটা হাতেনাতে প্রমাণ করে ছেড়েছে। প্রাকৃতি দুর্যোগ থেকে নদীবাঁধকে রক্ষা করতে তাই ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপণেই বেশি জোর দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।

ঘূর্ণিঝড় আমফানের পরে লণ্ডভণ্ড সুন্দরবনে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা রোপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য বন দফতর। তারপর ধাপে ধাপে ম্যানগ্রোভ বসানোর কাজ হয়েছে। এখন প্রায় আট হাজার ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করার উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।

বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের টিয়ামারী নদীর চড় বরাবর ১২০০ ফুট জায়গায় ম্যানগ্রোভ অরণ্য গড়ে তোলা হবে। সোমবার সেখানে ৮ হাজার চারা রোপণের ব্যবস্থা করেছে বিজ্ঞান মঞ্চ। দূষণ জর্জরিত সুন্দরবনকে বাঁচাতে নতুন স্লোগান তোলা হয়েছে 'বাঁচলে সুন্দরবন, তুমিও বাঁচবে।'

বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মিলন গাইন বলেছেন, ইচ্ছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে ম্যানগ্রোভ অরণ্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ৩১ জন বিজ্ঞান ও পরিবেশ কর্মী। সুন্দরবনের দয়াপুরের একটি ম্যানগ্রোভ নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে আনা হয়। গাছ বাঁচাতে ১২০০ ফুট নদীর চড় আগেই ঘিরে ফেলা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। সেখানে চারা রোপণ করা হবে।

নদী বাঁধ বাঁচাতে গোটা বিষয়টির পরিচালনা করছেন ইচ্ছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সভাপতি পার্থ মুখোপাধ্যায় ও সম্পাদক প্রদীপ্ত সরকার। পার্থ মুখোপাধ্যায়বলেছেন, "প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে সুন্দরবনের নদী বাঁধকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র ম্যানগ্রোভ। তাই আগামীতে সুন্দরবনের নদী বাঁধ রক্ষার স্বার্থে অসংখ্য জায়গায় ম্যানগ্রোভ অরণ্য গড়ে তোলার আহ্বান রাখছি। ঘটা করে ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ নয়,সুন্দরবনের জনজীবনের স্বার্থে আগামীতে একে রক্ষা করার দায় আমাদের।"

ম্যানগ্রোভের জঙ্গল ঝড়ের ঝাপটা ঠেকাতে ঢালের মতো কাজ করে। এই উদ্ভিদ তাদের শিকড় মাটি আঁকড়ে রাখে। ফলে বৃষ্টিতে মাটি আলগা হয়ে ভূমিধসের সম্ভাবনা কম থাকে। বন দফতরের অভিজ্ঞ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, চারা লাগালেই যে পরের বছর তার সুফল মিলবে, এমন নয়। চারাগুলি বড় হলে তবেই তারা ঝড় ঠেকাতে বা বাঁধ রক্ষা করতে পারবে। তার জন্য নিয়মিত বনসৃজন করাও দরকার।