বড়দিনের বাণীতে বিভক্ত বিশ্বে সংলাপের মাধ্যমে ভেদাভেদ মোচনের ডাক দিলেন পোপ

ভ্যাটিকানে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকা'র ব্যালকনিতে বড়দিনের বাণী দিতে জনতার সামনে দাঁড়িয়ে পোপ ফ্রান্সিস, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২১/ছবি গ্রেগোরিও বোর্জিয়া/এপি

শনিবার বড়দিনের বাণীতে পোপ ফ্রান্সিস ব্যক্তিগত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান মেরুকরণকে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, শুধুমাত্র সংলাপ বা আলোচনার মাধ্যমে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে যুদ্ধের হুমকির মত সংঘাতের নিষ্পত্তি হতে পারে।

নগর ও বিশ্বের কাছে দেয়া তাঁর বার্তায় পোপ ব্যক্তিবর্গ এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি বিরোধ এড়িয়ে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কভিড মহামারী তাদের মধ্যকার এই দূরত্বকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

রোমে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার ভেজা ও ঝড়ো আবহাওয়ায় মধ্য ব্যালকনির মাঝে দাঁড়িয়ে দেওয়া বাণীতে পোপ বলেন, “সামাজিক বন্ধন গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের ক্ষমতা শোচনীয় পরীক্ষার সম্মুখীন; সামাজিক বন্ধন রচনা থেকে আমাদের ক্রমশই সরে আসার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে ,সব কিছু একা নিজেরাই করতে চাই , একত্রে কিছু অর্জন করা এবং অন্যের করা প্রয়াসে সহায়তা না করার প্রবণতা বাড়ছে"।

তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আলোচনা পরিহার করার ঝুঁকি রয়েছে, দীর্ঘ আলোচনার পথ অনুসরণ করে মীমাংসা না করার পরিবর্তে জটিল সমস্যা সমাধানে তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ঝুঁকি থাকছে। অথচ আলোচনার পথই সংঘাতের সমাধান এবং সবার জন্য দীর্ঘস্থায়ী সুফল বয়ে আনতে পারে"।

গত সপ্তাহে ৮৫ বছরে উত্তীর্ণ পোপ ফ্রান্সিস,সিরিয়া, ইয়েমেন, ইসরাইল, ফিলিস্তিনি অঞ্চল, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, ইউক্রেন, সুদান, দক্ষিণ সুদান এবং অন্যান্য এলাকার সংঘাত, উত্তেজনা ও সঙ্কটের কথা তুলে ধরেন। ২০১৩ সালের ১৩ই মার্চ যে ব্যালকনি থেকে তিনি তাঁর নির্বাচনের পরে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখান থেকেই ভাষণে বলেন, "আমরা বিশ্বময় বহু সংঘাত, সঙ্কট ও মতানৈক্য প্রত্যক্ষ করে চলেছি"।

কভিড নিষেধাজ্ঞা ও আবহাওয়ার কারণে অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া ক্ষুদ্র এক জনতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, "মনে হয় এর অবসান কখনই ঘটবেনা, এখন যা এমনকি চোখেও পড়ে না। এতে আমরা এখন এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে নীরবে বহু বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। বহু ভাই ও বোনের যন্ত্রনা ও দুঃখের কান্না শোনার ঝুঁকিও আমরা নিতে চাই না”।

(রয়টার্স)