উত্তর - দক্ষিণ পুনরায় সংলাপ সম্ভাবনা : অতঃপর

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন এর সাথে এপ্রিলের পর থেকে বেশ কয়েকটি চিঠি আদান-প্রদান করেছেন।মঙ্গলবার সোওল ঘোষণা করেছে, পিয়ংইয়াং বাইরের বিশ্বের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে প্রস্তুত বলে আভাস পাওয়া গেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মতবিনিময়ের অংশ হিসাবে, উভয় কোরিয়ার দুই প্রতিনিধি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় প্রথম টেলিফোন কলের মাধ্যমে পানমুনজম সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে আন্ত-কোরিয়ান হটলাইন স্থাপন করতে সম্মত হন।

পৃথকভাবে, দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেন, একটি সামরিক চ্যানেল এবং অপর একটি আন্তঃ-কোরিয়ান সংযোগ চ্যানেল, যেটি উত্তর কোরিয়া গত বছর বিচ্ছিন্ন করে দেয়, সে দু’টি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার সরকারী কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা(কেসিএনএ) , হটলাইন পুনরুদ্ধার এবং চিঠি আদান-প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সেই সাথে এই পদক্ষেপগুলিকে দুটি কোরিয়ার মধ্যে "পারস্পরিক বিশ্বাস পুনরুদ্ধার এবং পুনর্মিলনকে উত্সাহিত করার এক বড় পদক্ষেপ" বলে অভিহিত করেছে।

কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এখন পুরো কোরিয়ান জাতি দুই কোরিয়ার স্থবির সম্পর্ককে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গতিশীল অবস্থায় দেখতে চায়”।

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এই সংলাপ গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসাবে দেখা হচ্ছে। এখন উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আবারও আলোচনা শুরু করবে কিনা, অথবা কভিড মহামারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণ করবে কিনা- বিশ্লেষকরা এখন সেটাই দেখার অপেক্ষায় আছেন।

মুন ও কিম ২০১৮ সালে তিনবার সাক্ষাত করেছেন, যেটি উত্তর কোরিয়ার নেতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনের পথ প্রশস্ত করেছিল।

তবে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পরে উত্তর কোরিয়া সওলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। গত বছর উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি আন্ত-কোরিয়ান যোগাযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়, এছাড়া সীমান্তের কাছে একটি যৌথ যোগাযোগ কেন্দ্রও ভেঙে দেয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার বাম- ঘেষাঁ প্রশাসন, যাদের এক বছরেরও কম সময় বাকী রয়েছে, নিয়মিতভাবে পুনরায় আলোচনার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিল, যদিও প্রায়শই পিয়ংইয়াংয়ের কাছ থেকে তিরস্কারমূলক বক্তব্য পাওয়া গেছে।

সোওল মঙ্গলবার বলেছেন, আশা করি হটলাইন পুনরুদ্ধার সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতির প্রথম পদক্ষেপ হবে। সোওলের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মুন এবং কিম "দুই কোরিয়ার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা পুনঃস্থাপন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পর্ক স্থাপনে আবারও অগ্রগতি সাধনে সম্মত হয়েছেন"।

চলতি মাসের শুরুতে, দক্ষিণ কোরিয়ার জুঙ্গাঙ্গ ইলবো মুন এবং কিমের চিঠি চালাচালির বিষয়টির কথা জানিয়ে বলেছে, দুই কোরিয়ার প্রতিনিধি চতুর্থ ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করছিলেন । তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা আর একটি বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।