১৫০টি দেশে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন নাজমুন

অ্যাঙ্গোলায় নাজমুন নাহার।

অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হলো। ১৫০ দেশে বাংলাদেশি পতাকা উড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন নাজমুন নাহার। বিশ্বকে হাতের মুঠোয় নেওয়াটা তাঁর কাছে আর কল্পনা নয়। সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ নামের দেশটিতে নাজমুন আজ অবতরণ করে উড়িয়ে দেন বাংলাদেশি পতাকা। বুকে পতাকা জড়িয়ে ছবি তুলে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেন, "আমি পেরেছি।"

আফ্রিকান দেশ অ্যাঙ্গলোর কাছাকাছি দেশটিতে পা রেখে নাজমুন ভয়েস অব আমেরিকাকে ফোনে জানান, "আমি পেরেছি। ২১ বছর ধরে চেষ্টার সাফল্য আজ ঘরে তুলেছি। এ কাজটি করেছি আমার দেশকে ভালোবেসে। সারা দুনিয়ার কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চেয়েছি। পেরেছি তা করতে।"

নাজমুন জানান, সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ সফরের মধ্য দিয়ে তাঁর ১৫০টি দেশ সফর শেষ হলো। এত দেশ সফরের রেকর্ড একমাত্র বাংলাদেশি তাঁরই রয়েছে। নাজমুন বলেন, এই ঘুরে বেড়ানো এত সহজ ছিল না। অর্থের সংকট ছিল। তারপর বিভিন্ন দেশে ভোগান্তি ছিল। অনেক সময় সড়ক পথে, হেঁটে অনেক সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। বাধা-বিপত্তির শেষ ছিল না। সড়ক পথে একা চলতে ভয় ছিল। কষ্ট ছিল। আফ্রিকান জঙ্গলে একবার আটকা পড়ে সর্বোচ্চ আড়াই দিন না খেয়ে কাটিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য থেকে সরে যাননি এক মুহূর্তের জন্য।

নাজমুন বললেন, জাপান থেকে গিয়েছিলাম তাইওয়ান। পাঁচ'শ সিঁড়ি পার হয়ে তাইপে বিখ্যাত এলিফ্যান্ট মাউন্টেনে বাংলাদেশি পতাকা উড়ানোর পর মনে হয়েছিল আকাশটা ছুঁয়ে দেখেছি। মানুষ চেষ্টা করলে কোন কিছু অসাধ্য নেই। মানুষ পারে। করোনাকালে নাজমুন অভিযাত্রা বন্ধ করেননি। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ব্রুনাই সফর করেন।

নাজমুন জীবন ও জীবিকার সন্ধানে সুইডেনে অবস্থান করছেন। অর্থ জোগান করেই বেরিয়ে পড়েন পথে। নাজমুন বললেন, ২০০ দেশ সফর করতে চাই। বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশের একটি মেয়ে সারা দুনিয়া দেখেছে। নাজমুন বলেন, তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরবেন ক্রমান্বয়ে। প্রকাশ করবেন ১৫০ দেশ সফরের সকল ঘটনাবলী। সফর করা দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও মিশেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। পত্রিকাগুলো প্রকাশ করেছে তাঁর সফরের খবর।

নাজমুনের জন্ম লক্ষ্মীপুরের গঙ্গাপুর গ্রামে। আট ভাইবোনের সবার ছোট নাজমুন। বললেন, পরিবারে অনুপ্রেরণা ছিল। একবার গ্রামে যাওয়ার পর মানুষ ছুটে এসে অভিবাদন জানিয়েছিল। ভালো লেগেছে মানুষের ভালাবাসা পেয়ে। যত দিন জীবিত থাকব বাংলাদেশকে ব্যান্ডিং করে যেতে চাই।