প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজধানী দিল্লিতে ভারতের বিতর্কিত নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমি পূজা করলেন। দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু করে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত বিস্তৃত অপূর্ব সুন্দর জায়গাটি রয়েছে, সেটিকে ঢেলে সাজার জন্য কুড়ি হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার নাম দেওয়া হয়েছে সেন্ট্রাল ভিস্তা। তাতে প্রচুর গাছ কাটা যাবে, প্রচুর ঐতিহ্যবাহী বাড়ি ভাঙা পড়বে এবং প্রচুর নতুন ভবন নির্মাণ হবে। পরিবেশের বিপুল ক্ষতি ও ঐতিহ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। তার ফলাফল কী হবে জানা নেই, অথচ মামলা চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস অনুষ্ঠান করে ফেললেন, এটা সুপ্রিম কোর্ট একেবারেই পছন্দ করেনি। দুদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করে বলেছে, আপনারা নতুন সংসদ ভবনের ভূমি পূজা করতে পারেন, কাগজপত্র সব তৈরি করতে পারেন, কিন্তু মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত ওখানে কোনও রকম ভাঙচুর করা যাবে না, নির্মাণ করা যাবে না, গাছ কাটাও যাবে না। উল্লেখ্য, সরকার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই পুরনো সংসদ ভবনের বদলে নতুন সংসদ ভবন চাইছিল। কারণ ব্রিটিশ আমলে তৈরি পুরনো সংসদ ভবনটি এখন এত জন সাংসদের জন্য অপ্রশস্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এক হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের ১৫ই অগাস্ট স্বাধীন ভারতের ৭৫ বর্ষপূর্তির দিনে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হবে ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু তা হবে কিনা সেটা নির্ভর করবে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের উপর। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতির অবস্থা যখন এত খারাপ তখন কুড়ি হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই বিশাল প্রকল্প নেওয়ার যৌক্তিকতা কতটা? পরিবেশবিদদের সঙ্গে সারাদেশের নামী স্থপতিরাও একযোগে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। কিন্তু সরকার তাতে কান দিতে নারাজ। আজ দুশোজন বিশিষ্ট অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিদেশি অভ্যাগত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদরা তো ছিলেনই, সেই সঙ্গে ছিলেন রতন টাটা। কারণ টাটা কোম্পানি সেন্ট্রাল ভিস্তার অনেকটা নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে। নতুন সংসদ ভবনটিও তাদেরই তৈরি করার কথা।
Your browser doesn’t support HTML5