ছয় ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু মায়ের খবর কেউ রাখে না। একমুঠো ভাতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ান বাংলাদেশের ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের মরিময় বেগম। বয়স এখন ১০০ বছরের কাছাকাছি।
দুঃখ করে বলেন, ছেলেরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্যাংকার। তারা সবাই যার যার অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত। তারপরও তাদের কারও ঘরে ঠাঁই হয়নি এ মায়ের। অভাব অনটনে খাবারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিলেন রাস্তার পাশে। এমন অবস্থায় পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকাবাসী। ঠাঁই দিয়েছেন গ্রামের আবদুল লতিফের ঘরে। এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
বৃদ্ধ মরিয়ম বেগমের আট সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আক্তার হোসেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। অন্য ছেলেদের মধ্যে আবদুল্লাহ বাকী ব্যবসায়ী, সাখাওয়াত হোসেন সাকি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী, ছোট ছেলে ডাক্তার হুমায়ূন কবির শিশু বিশেষজ্ঞ (বিসিএস), জাহাঙ্গীর হোসেন ব্যবসায়ী এবং আলমগীর হোসেন প্রবাসী। প্রবাসী আলমগীর হোসেন ছাড়া অন্য পাঁচ ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকায়। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের অবস্থাও ভালো।
কারও সংসারে অভাব-অনটন নেই। কিন্তু তাদের মাকে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে পথে পথে। খেয়ে না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় দিনাতিপাত করছিলেন মরিয়ম বেগম। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হন মরিয়ম। এরপর বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাতে আঘাত পান। তাকে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করেন আবদুল লতিফ। তিনি নিয়ে যান তার বাড়িতে । তারপর থেকে আবদুল লতিফই ওই বৃদ্ধার সেবা করছেন।
আবদুল লতিফ বলেন, রাস্তার পাশে পড়েছিলেন বৃদ্ধ মরিয়ম। গ্রামের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে আমার বাড়িতে নিয়ে আসেন। আমি তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ বৃদ্ধাকে তার সন্তানরা ভরণপোষণ না করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, মা-বাবাকে ভরণপোষণ না করলে ছেলে সন্তানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।