প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মর্যাদার লড়াই এখন রীতিমতো কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের পথে এগিয়ে চলেছে। তবে এই লড়াইয়ে মমতা একা নন, তাঁর পাশে আছে ভারতের প্রায় সবক'টি বিরোধীদল। তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে আহ্বান জানাচ্ছে। সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি ঘটেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দেখার জন্য যেদিন প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। সেদিন ওড়িশা দেখে তিনি পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুন্ডায় আসেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য পদস্থ সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণের বিষয় নিয়ে মোদির আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী থাকার প্রতিবাদে মমতা বৈঠকে যোগ দিতে চাননি। তিনি এখানকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব সম্বলিত একটি নোট প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন মুখ্য সচিবকে সঙ্গে নিয়ে। সেখান থেকে তাঁরা যান দীঘায় ইয়াস কতটা বিপর্যয় ঘটিয়েছে, দেখার জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এটাকে ভালোভাবে নেননি। তিনি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করেন। সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক শোকজ দিতে থাকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
গতকাল ছিল মুখ্য সচিব হিসেবে তাঁর শেষ দিন। তিনি যদিও তার আগেই তিন মাসের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমতি পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে অবিলম্বে দিল্লিতে গিয়ে কাজে যোগ দিতে বলা হয়। তিনি তা না করে মুখ্য সচিব পদে অবসর নিয়ে নেন এবং সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে রাজ্যের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেন। এই নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। গতকাল একটি শোকজ নোটিস দেওয়া হয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আজ আবার আর একটি নোটিস দিয়ে জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাজের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভোটের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে না পেরে এখন প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন হতাশাগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
Your browser doesn’t support HTML5
এই লড়াইয়ে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা থেকে শুরু করে জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স দল দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি, দিল্লির আম আদমি পার্টি, উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি, প্রত্যেকেই মমতার পাশে দাঁড়িয়েছে এবং মোদি সরকারকে উৎখাত করার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মমতাকে নেতৃত্ব দিতে তারা অনুরোধ করেছে।