২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরেছেন ভারতের শিশু অধিকার সংগ্রামী কৈল্যাস সত্যার্থী। দিল্লীতে ফিরে তিনি রাতেই চলে গেলেন মধ্য প্রদেশে তার নিজের বিদিশা শহরে। যেখানে তিনি ছেলেবেলা কাটিয়েছেন, লেখাপড়া করেছেন। বলা হচ্ছে শহরের প্রতিটি মানুষের কাছে কৈলাসের কোন কোন না কোন স্মৃতিকথা শোনা যায়।
দিল্লী থেকে টেলিফোনে আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি অসলোয় তাঁর অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতের পরকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। ওয়াশিংটন স্টুডিও থেকে টেলিফোনে তার সঙ্গে কথা বলেন রোকেয়া হায়দার।
Your browser doesn’t support HTML5
কৈল্যাস সত্যার্থী নামটি গত দুই দশক ধরেই ভারতে নয় দেশে বিদেশে পরিচিত হয়ে উঠেছে। শিশু শ্রম শিশু অধিকার নিয়ে সোচ্চার বলিষ্ঠ এই কণ্ঠ দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ-আমেরিকায় শিশুদের দাবী নিয়ে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়েছে। দিল্লী ফিরলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে। এখন তাঁর দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। অসলোর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বললেন:
নিঃসেন্দেহে এ ছিল বিরাট এক অভিজ্ঞতা। আমাকে তা উৎসাহ যুগিয়েছে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। উদ্বুদ্ধ করেছে। তবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো – এ হচ্ছে লক্ষ কোটি শিশুর সাফল্য; যাদের কণ্ঠ কখনও শোনা যায়নি, যাদের চেহারা কখনও কোন সংবাদ মাধ্যমে দেখা যায়নি, যাদের পরিচয় কেউই জানেনা। তাই এ ছিল তাদের সবার জন্যই এক বিশেষ মূহুর্ত। আমি তাদেরই পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছি।
কৈল্যাস সত্যার্থী পেশায় প্রকৌশলী। কিন্তু ভারতে তথা গোটা বিশ্বে অবহেলিত বঞ্চিত শিশুদের অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে তিনি তার পেশা ছেড়ে শিশু শ্রমের বিরুদ্দে কাজ করতে শুরু করেন। তার আন্দোলন ছোট ছেলেমেয়দের লেখাপড়া করে সুস্থ পরিবেশে, সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে তোলায় সাহায্য করা। বিশ্ব মানচিত্রে ভারতের সফল শিশুদের সুপ্রতিষ্ঠিত করা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে মিলে কাজ করে চলেছেন। বিশ্বের ১৪৪টি দেশে শত সহস্র শিশুর অধিকার আদায়ের দাবী নিয়ে কাজ করছেন। তিনি তাঁর নিজের দেশের সরকারের কাছ থেকে শিশু পাচার তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনের দাবী জানিয়েছেন।
তিনি বলেন: দিল্লী আদালতে জানানো হয়েছে যে তারা নতুন একটি আইন পাশ করবেন। আমরা এতে করে আনন্দিত যে সরকার কিছুই বিধি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। দিল্লী সরকার নতুন একটি আইন পাশ করবেন বলে জানা গেছে।
তিনি জানান – দেশ থেকে কিশোরী বালিকাদের পাচার করা হয়, মহিলাদের পাচার করা হয়, আমরা সেইসব পথ বন্ধ করতে চাই। এটা অনেকদিন থেকে বিরাট সমস্যা হয়ে ছিল। তিনি UNESCO, Global Partnership for Education এরও সদস্য। এবং শিশুদের লেখাপড়া শেখার অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। তিনি জানালেন সাম্প্রতিক কয়েকটি সংস্থা আইএলও এবং অন্য কয়েকটি সংস্থার রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে দক্ষিন এশিয়ায় ছোট ছেলেমেয়েদের শিক্ষা ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে। যেমন বাংলাদেশে ছেলে ও মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।
তিনি বলেন দক্ষিণ এশিয়ায় গত ১৫ বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে। তার আগে শিশু শিক্ষার সুযোগে তেমন উন্নতি হয়নি বা একই অবস্থায় ছিল। এখন তার পরিবর্তন হচ্ছে। ভালর দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বালক-বালিকার শিক্ষার সুযোগ সমপর্যায়ে এগোচ্ছে। ভারতে স্কুলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করার কারণে এখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। যদি তারা খেতে না পায়, তা হলে তারা কাজ করবে পরিবারের সাহয্যের জন্যই কাজ করতে বাধ্য হবে।