ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ-এর বরাত দিয়ে জাতীয় উদ্ধারকারী দলের মুখপাত্র মোজতবা খালেদি বলেছেন, “দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েকদিনের বন্যা ও বৃষ্টির পর আমরা দেখেছি, সেখানে হতাহত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে”।
আরও ১৪ জন আহত হয়েছেন উল্লেখ করে খালেদী বলেন, “এখন পর্যন্ত আটজন মারা গেছে এবং দু’জন নিখোঁজ রয়েছে”।
স্থানীয় সংকট ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা রহিম আজাদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে ফার্স প্রদেশে।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা সোমবার বলেন, ঐ প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে দু’জন নিহত হয়েছে।
আজাদি বলেন, ভারী বৃষ্টিতে “কৃষি, অবকাঠামোসহ, শহুরে ও গ্রামীণ আবাসন” ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরানের রেড ক্রিসেন্ট -এর উদ্ধার ও জরুরি কার্যক্রমের প্রধান মেহেদি ভালিপুর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, “তিন হাজারেরও বেশি লোকের জন্য তারা জরুরি বাসস্থান সরবরাহ করেছে এবং কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ ইতোমধ্যে ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে”।
৫০০ টিরও বেশি দল দেশের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে সহায়তা প্রদান করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অনেক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে এবং রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো অবকাঠামোগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে”।
মঙ্গলবার রেড ক্রিসেন্টের প্রকাশিত ছবিগুলিতে দেখা গেছে, তাদের কর্মীরা স্পোর্টস হলগুলিতে তাঁবু স্থাপন করছে এবং বন্যা প্লাবিত রাস্তায় কিংবা বরফে ঢাকা পাহাড়ি এলাকায় আটকে পড়া গাড়িগুলিকে সাহায্য করছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ইরানের ৩১টি প্রদেশের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা জুড়ে ৮৭টি শহরে তাদের ত্রাণ তৎপরতা চলছে।
ইরানের আবহাওয়া দফতরের একজন কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, আবহাওয়ার এই অবস্থা শুক্রবার পর্যন্ত স্থায়ী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
খারাপ আবহাওয়া সাম্প্রতিক দিনগুলিতে শুধুমাত্র দক্ষিণ ইরান নয়, উপসাগরীয় আরব দেশগুলিকেও প্রভাবিত করছে, বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে আবহাওয়া সতর্কতা জারি করেছে।
দুবাই এবং আবুধাবিসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনেক স্থানে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ওইসব অঞ্চলে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত শুষ্ক, ইরান গত এক দশকে বারবার খরার কবলে পড়েছে পাশাপাশি নিয়মিত বন্যাও হয়েছে।
২০১৯ সালে, দেশটির দক্ষিণে প্রবল বন্যায় কমপক্ষে ৭৬ জন মারা যায় এবং এতে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন খরাকে বাড়িয়ে তোলে, পাশাপাশি এর তীব্রতা এবং যে হারে খরা হচ্ছে তা খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে।