দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর কলকাতার টালিগঞ্জ পাড়ায় বাংলা সিনেমার শুটিং আবার শুরু হতে চলেছে আগামী ১০ই জুন। আজ টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে বাংলা ফিল্মের প্রযোজকেরা, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এবং কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন। মধ্যস্থ হিসেবে সরকারের পক্ষে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
বৈঠকের পরে অরূপ বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, লকডাউনে জীবন ও জীবিকার অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, আর বসে না থেকে কোথাও একটা শুরু করতে হবে। তাই আমরা সিনেমার শুটিং শুরু করার কথা ভেবেছি। ঠিক হয়েছে যে, করোনা সংক্রান্ত সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনেই শুটিং হবে। ৩৫ জনের বেশি কখনই সেটে কিংবা ফ্লোরের কাছাকাছি থাকতে পারবেন না। এও ঠিক হয়েছে যে ফিল্মের কলাকুশলীদের স্বাস্থ্যবিমার শতকরা ১০০ ভাগই প্রযোজক সংস্থা দেবে, আর অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য প্রযোজক সংস্থা দেবে স্বাস্থ্যবিমার ৫০% অর্থ। বাকিটা তাঁদের নিজেদের দিতে হবে। আপাতত শিশু অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের শুটিং করতে আসতে দেওয়া হবে না।
এর পর প্রযোজক-পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, লকডাউনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। সুতরাং একটা কোনও ভাবে শুরু করার কথা ভাবতে হয়েছে। এত জন মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন, তাঁদের সকলকে না খেয়ে মরতে দেওয়া যায় না। অভিনেতা ও পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, একটা কোথাও শুরু করতে হবে, তাই আপাতত এই ভাবেই শুরু করা হোক। তার পর কিছুদিন পরে বোঝা যাবে যে আরও কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। একটা প্রশ্ন উঠেছে যে, সিনেমা হলই এখনও চালু হয়নি, আনলক প্রক্রিয়ার মধ্যে সিনেমা হল খোলার কথা এক বারও বলা হয়নি, তা হলে ফিল্মের শুটিং শুরু হয়ে একদিন শেষ হলেও কবে কোথায় সেই সিনেমা মুক্তি পাবে?
অরিন্দম শীল বলেন মুক্তি পাওয়ার কথা এই মুহূর্তে ভাবা হচ্ছে না, কারণ ভাবা যাচ্ছে না। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি যা আছে তার থেকে ভবিষ্যতে আরও বাড়বে না কমবে সেটাও এখনও ঠিক নেই। সুতরাং আমরা শুধু শুরু করছি, শেষ কী ভাবে হবে সেটা ভবিষ্যতই বলবে।
ও দিকে চিত্রতারকা ও তৃণমূল বিধায়ক দেব একটা বড় মানবিক কর্মসূচি নিয়েছেন। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে নেপাল সীমান্তে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে ৩৬ জন আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের ইতিমধ্যে বিমানে করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া আজকেই আবার ট্রেনে করে এসে পৌঁছেছেন আরও প্রায় আড়াইশো জন। দেব বলেন, আমরা জানি আরও অন্তত সাড়ে সাতশো পরিযায়ী শ্রমিক নেপালের দিকে আটকে রয়েছেন। তাঁদের ধাপে ধাপে ফিরিয়ে আনার জন্য সবদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Your browser doesn’t support HTML5