কুমিল্লার ঘটনা দুঃখজনক, অপরাধীর বিচার হবে: শেখ হাসিনা 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- ফটো- পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ সম্মানের সঙ্গে যুগের পর যুগ বসবাস করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ রক্ত দিয়েছে। পবিত্র কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় অপরাধী যে-ই হোক না কেন তার বিচার করা হবে।" বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, "মানবধর্মকে সম্মান করা ইসলাম আমাদের শেখায়। নিজের ধর্ম পালনের অধিকার সবার আছে। কিন্তু অন্যের ধর্মকে কেউ হেয় করতে পারে না। নিজের ধর্মকে সম্মান করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যের ধর্মকেও সম্মান করতে হয়।" সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিটি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন দলীয় সভানেত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিবজায় রাখতে হবে। প্রত্যেকটা এলাকায় আমাদের নেতা-কর্মীদের নজরদারি বাড়াতে হবে। শান্তি-সম্মেলন, শান্তি-মিছিল, শান্তি-সভা করতে হবে। সম্প্রীতির ব্যবস্থা নিতে হবে, যেন কোনোরকমের সংঘাত দেখা না দেয়।"

তিনি বলেন, "এই মাটিতে প্রত্যেকটা ধর্মের মানুষ সে মুসলমান হোক, খ্রিস্টান হোক, হিন্দু হোক, বৌদ্ধ হোক সবাই যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে। মানুষকে মানুষ হিসেবে আমি দেখি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখতে হবে। আর সেভাবে মানুষের সেবা করতে হবে।" অপরাধীদের বিচার সরকার করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না। কেউ যদি অপরাধ করে, সে যেই হোক অপরাধীদের বিচার হবে। আমাদের সরকার সেই বিচার করবে।" শেখ হাসিনা বলেন, "আমাদের নবী বলেছেন ধর্ম নিয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করবে না। আমাদের সকলেরই সে কথাটা মেনে চলতে হবে।"

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "কুমিল্লার ঘটনার পরে পীরগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘটনা ঘটেছে। যাদের ঘরবাড়ি পুড়েছে, তাঁবু করে তাদের থাকার ব্যবস্থা, প্রথমে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা, রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। তাদের কাপড়চোপড় সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাদের এভাবে ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে আমরা ঘরবাড়ি তৈরি করে দেবো এবং ইতোমধ্যে সে ব্যবস্থা নিয়েছি।"

ওদিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বুধবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিলেন জনৈক ইকবাল হোসেন। তিনি বলেছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ এটা নিশ্চিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।